Thursday, October 25, 2012

কোরবানি ও ঈদ...

আমি যখন অনেক ছোট, হঠাৎ একদিন স্কুল থেকে ফিরে দেখলাম, বাসায় ঢোকার পথে একটা বিশাল ভয়াল দর্শন গরু দাড়িয়ে আছে। তাও আবার গোল্ডেন-ব্রাউন আর কালোর ডোরাকাটা। আর বাড়ির কিছু লোক উৎসাহ নিয়ে ওটা ঘিরে দড়িয়ে আছে। ভয়ে আমি বাসায় ঢুকতে পারছি না। কেউ একজন অভয় দিল, "কিচ্ছু বলবে না, আসো..."

আমি যেই ঢুকতে গেলাম, গরুটা গলা বাড়িয়ে দিল আমার দিকে। আমি চিৎকার দিয়ে তিন লাফে গেটের বাইরে। তখন কারো দয়া হল, আমাকে কোলে নিয়ে পার
 করে দিতে এল। আবারও একই ঘটনা। কিন্তু সে মোটেও ভয় না পায়ে আমাকে বরং গরুর দিকে এগিয়ে দিচ্ছে, আমি ভায়ে তার গলা জড়িয়ে ধরে আছি। সে বলল, "আদর করে দাও"।
আমি যতোই ভয় পাই, তিনি নাছোড়বান্দা। শেষে আমার হাত টেনে নিয়ে গরুর গলার তলে বুলিয়ে দিলেন।
ওমা, এ দেখি কিছুই বলে না, বরং আরামে চোখ বুজে ফেলল!!!

সেই শুরু, তারপর আমি প্রতিদিন খেলা বাদ দিয়ে আগে আগে বাসায় পৌছে সেই গরুর সাথেই সময় কাটাতাম। ১৫-২০ দিন আগেই কেনা হয়েছিল গরুটা। যাই হোক, কোরবানির ঈদ এল, আমার কান্না আর চিৎকারে কর্নপাত না করে সেটাকে কোরবানি দেয়া হল। সেই দিন আব্বা বেশ ধমক দিয়ে আমাকে বাধ্য করলেন ঐ কোরবানি করা গরুর পিছনে দাড়িয়ে ছবি তুলতে। ছবিটা এখনো আছে। কেউ বেড়াতে আসলে আমার মা সেই গল্পটা বলে ছবিটা দেখায়। তারাও আগ্রহ নিয়ে দেখে। শুধু দেখে না, সেই ছবিতে আমার চোখে পানি জমে আছে।

এরপর থেকে আমি আর কোরবানি সহ্য করতে পারি না। জবাই করার সময়টা বাসায় পড়ে থাকি এখনও। শেষ দুপুর বা বিকালের দিকে বের হই, যখন, সব কিছু পরিষ্কার করা প্রায় শেষ।

মাংসের গায়ে হলুদ লবন মেখে, গুনার তারে গেথে আমার নানী বেশ অনেকগুলো বড় বড় মালা বানাতেন। আর সেই মালা প্রতিদিন ছাদ আর বারান্দার গ্রীলে রোদ দেয়া হত। আর কি কি প্রসেসিং চালাতেন উনি তা জানি না, কিন্তু, প্রায় ৫-৬ মাস পরেও হঠাৎ কোন দিন; কোন এক ডানোর কৌটা থেকে উনি কিছু পাথরের মত শক্ত বস্তু বের করে বলতেন, "আজকে কোরবানি মাংসটা রান্না করব।"

অসাধারন সেই স্বাদ...

নানী বেশ অসুস্থ, এখন ঢাকাতেই থাকছেন। আমার মা-ও অসুস্থ হওয়া শুরু করেছেন। আর আমি সেই শক্ত বস্তুটির স্বাদ পাইনা ৮-৯ বছর... মিস করি...

কিছু জরুরী বিষয়ে ফালতু কথা...


যখন ছোট ছিলাম, একটা কথা প্রায়ই শুনতাম, "মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই"। ইদানীং দেখছি, কিছু মানুষ আরেকটা কথা চালু করছে "নাস্তিক নাস্তিক ভাই ভাই"। কেমন যেন সিমিলার টাইপ কথা !!!

আমার গলা আজন্ম নিচু ছিল। মাঝে মধ্যে তবু বড় গলায় কয়েকটা কথা বলে ফেলেছি। কিছু মানুষের সেই আবোল-তাবোল কথা ভালো লেগে গেছে, এখন, তাদের সাথে কথাবার্তা চলে। কিন্তু হঠাৎ করেই দেখি, আমার ফ্রেন্ড-লিস্টে পুরা ৫০১ জন মানুষ!!! এদের অনেকের নামেই দেখি "Atheist", "নাস্তিক" ইত্যাদি অনুসর্গ-উপসর্গ যোগ করা। তারা আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছেন, এটা জেনে যে আমি ধর্মে বিশ্বাস করি না। ভাই বলেও ডাকেন। কেমন যেন "নাস্তিক নাস্তিক ভাই ভাই" টাইপ লাগে।

অনেকে আবার ঘোষণা দিয়ে মুসলমান থেকে নাস্তিক হয়ে যান এবং তা প্রমাণ করতে, ঘোষণা দিয়ে শুকরের মাংস খান। তাদের বক্তব্য, সৃষ্টির আদিযুগ হতে, মানুষকে শোষণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করার জন্যই ধর্মের প্রবর্তন করা হয়েছে। ব্যাপারটা নিয়ে আমার নিজস্ব একটা দৃষ্টিভঙ্গি আছে, কিন্তু সেটা পরের বিষয়। তারচে কাছের বিষয় হল, বক্তব্যটির প্রথমাংশ- "সৃষ্টির আদি যুগ হতে"।

Wednesday, October 24, 2012

প্রতিবাদ সমাবেশ


গত ১ সপ্তাহ ধরেই চলছে জ্বালাতন। নাকি ১ মাস?...
প্রতিদিন দুবেলা এস,এম,এস, আর ফেসবুকে পোস্টিং, মেইল, ইত্যাদি, ইত্যাদি... বিরক্ত হয়ে ভাবি, কোন দুঃখে যে নাম লিখেছিলাম খাতায়! যাবো না সেটা আগে থেকেই জানি, আমার অতো ফালতু সময় নেই, অফিস আছে। কিন্তু ওরা তো ছাড়ছেই না।

যেতে অবশ্য হবে ঐ এলাকায়, অফিসটাও যে কেন এই এলাকাতেই পড়ল সেটাই ভাবছি।

দুত্তরি লোডশেডিংও আর সময় পেল না, সেই সকাল থেকেই চলছে। জেনারেটরটাও হাল ছেড়ে দিয়ে বিকল। তাও যদি একটু শান্তি থাকতো। পাশেই মাঠে চলছে মাইকিং। আমার প্রচণ্ড শব্দে মাথা ধরে আছে। আচ্ছা... ওদের ব্যাটারি শেষ হয় না? তারস্বরে একজন সেই সকাল থেকেই চেঁচাচ্ছে "আসেন ভাইয়েরা, আমাদের এই প্রতিবাদে দলে দলে যোগ দিন... যোগ দিন দলে দলে... সফল করুন...."। গলা ব্যথা করে না?

Monday, October 22, 2012

মহান হবার ফর্মুলা আবিষ্কারের গল্প... (পঞ্চম পর্ব - ভিন্ন জগত)



বহুদিন ধরেই ঠিকভাবে কলম ধরা হচ্ছে না। ১৫" জগতের কির্বোডটাকে আমি এখনও ঠিক আত্মস্থ করে উঠতে পারিনি, তাই আমার লিখার ক্ষেত্রে কলমই ভরসা। কিন্তু নতুন একটা জীবনে সারভাইবালের সংগ্রামে ব্যস্ততা এতোই বেড়ে গিয়েছে যে কাগজ, কলম এবং আমি; এই তিনটাকে গুছিয়ে একসাথে করা হয়ে উঠছে না। এরই মধ্যে হয়েছে বেশ কিছু পট পরিবর্তন। পদ্মা, মেঘনায় বয়ে গিয়েছে বহুদূর আর ফেসবুকে পার হয়ে গিয়েছে লক্ষ লক্ষ স্ট্যটাস আর কমেন্ট। তাই আমিও মাঝের কিছু ক্যচাল বদ দিয়ে দুই ধাপ সামনে লাফ দিলাম। যদি আবার সময় সুযোগ হয় স্মৃতিচারণের তখন দেখা যাবে ওগুলো।
বিয়ে করে ফেলেছি মার্চের দুই, কেউ জানে না।
নতুন বাসায় উঠেছি মার্চের চার। নতুন জীবনের শুরুও সেদিন থেকেই। এক রুমের ছোট্ট একটা সাবলেট বাসা। সম্বল, দু'-তিন সেট জামা কাপড়, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল। এছাড়া আর কিচ্ছু নেই। সবে বেতন পেয়েছি। অর্ধেকটা বাড়িভাড়া আর বাকিটায় মাস খরচা ছাড়াও আরও বেশ কিছু খরচা। লেপ-তোষক, কাঁথা-বালিশ থেকে শুরু করে সাবান-শ্যাম্পু, টুথপেস্ট-টুথব্রাশ সব কিছু এটা দিয়েই কভার করতে হবে। জমানো টাকাও নেই। একটা অনিশ্চিত যাত্রার মতোই সংসার জীবনের যাত্রা শুরু।

মহান হবার ফর্মুলা আবিষ্কারের গল্প... (দ্বিতীয় পর্ব - সেনাজীবন)


~~~
চারিদিকেই কেমন যেন যুদ্ধের সাজ সাজ রব। ১৫ ইঞ্চির দুনিয়ার সবাই নাড়ে-চড়ে বসছে। নতুন একটা পেজ চালু হচ্ছে। ভাইয়া তাতে সমর্থন দিয়েছেন। ভাইয়ার সমর্থনের কারণে এ পেজের জনপ্রিয়তা হুহু করে বাড়ছে, জোয়ারের স্রোতের মতন। এই পেজটা হবে ছাগুদের উপর একটা চরম ব্লো। "পারলে আরেকটা লেইখ্যা দেখা" চ্যালেঞ্জের জবাব দিতেই এই পেজ। আমার প্রেমিকার উৎসাহ তখন তুঙ্গে। ওর কথা হল, এখন আর কাঁচুমাচু করে লাভ নাই। ভাইয়া বলছে, সবারই উচিৎ নিজের অস্তিত্বের কথা জানান দেয়া। আসলেই তো তাই হওয়া উচিৎ, তাই না? ধার্মিক পাবলিক যেই পরিমাণে আক্রমণাত্মক, কিছু হলেই কল্লা নামাইতে চলে আসে, আমাদেরও উচিৎ অফেন্সে যাওয়া। কাপুরুষ হয়ে একশ দিন বাচার চেয়ে বাঘের মত একদিন বাচা উচিৎ। ভাইয়ের ডাকে, আমাদের বিপ্লবী চেতনা জেগে উঠছে, রক্ত গরম করা সব স্ট্যাটাস ছাড়ছেন ভাইয়া।

মহান হবার ফর্মুলা আবিষ্কারের গল্প... (প্রথম পর্ব: নতুন পৃথিবী)


আমার দিন-কাল ভালই কাটছিল। দুপুর পর্যন্ত ক্লাস, বিকেল পর্যন্ত অফিস, সন্ধ্যা পর্যন্ত ডেটিং, রাত পর্যন্ত আড্ডা আর মাঝ-রাত পর্যন্ত মুঠোফোনে প্রেমালাপ। পৃথিবীর সকল সমস্যা এবং তার সমাধান, এই ছকের মধ্যেই বেধে ফেলা যেত। ফোনে প্রেমালাপ আর কত সময়ই করা যায়! ভালবাসি... খুব ভালবাসি... এই প্রকার আলাপচারীতার দৈর্ঘ্য কখনোই ৩০ মিনিট ছাড়িয়ে যায় না। বাকিটা সময় দৈনন্দিন হাড়ি-পাতিলের সংঘর্ষের শব্দাবলীই তখন হয়ে ওঠে প্রেম!
হাড়ি-কড়াইয়ের এই টুংটাং শব্দের মাঝেই শুনতে পেলাম, আমার প্রেমিকা নাকি ব্লগ পড়া ধরেছে। যাই হোক, এটাকে কখনোই আমার সেই ব্যক্তিগত রুটিনের সাথে সাংঘর্ষিক মনে হয় নি, তাই এটা নিয়ে ভাবার কথাও ভাবতে হয়নি কখনও। তবুও প্রেমিকার কাছে ক্রেডিট নেবার লোভটা ছাড়ার মত মহামানবীয় গুন আমার নেই। ফলাফল, প্রেমিকার বিস্ময় মাখা সোৎসাহের উক্তি -
" আয়হায়!!!! তুমি ব্লগ লিখ!!!!!!!!!! দাও তো লিংকটা দাও তো...."
" এহ! হে! তোমার তো ম্যাক্সিমামই ইংলিশ ...."
" ব্লগ গুলাতে কেউ ইংলিশ লেখা পড়ে না..... "
" তুমি তো ভালোই লিখ, বাংলায় লিখ না.... "
" ব্লগে একটা একাউন্ট খুল না...."
" দরকার হলে আমি ট্রান্সলেট করে দিলাম....."
" একটা লিংক দিচ্ছি, পড়, বল কেমন লাগে...."

উত্তপ্ত মস্তিষ্কের বিকৃত চিন্তা ও ওর্বের ক্ষোভ দমন


আগে আমাকে আমার অনেক আস্তিক বন্ধু মাঝে মাঝেই প্রশ্ন করত, আমি কেন নাস্তিক। উত্তরে আমি সব সময়ই পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিতাম, তুই কেন আস্তিক। প্রতিবারই অদের উত্তর ঘুরে ফিরে এক জায়গায় এসে দাঁড়াত, "আমার বিশ্বাস স্রষ্টা আছেন।", তখন আমিও হাসতে হাসতে বলতাম, "আমারও বিশ্বাস কেউ নেই"। কেউ কেউ এখানেই থেমে যেত, কারও উৎসাহ আরও বেশি ছিল, তারা জানতে চাইত, "কেন আমার বিশ্বাস কেউ নাই" অথবা, "কেন আমার এমন বিশ্বাস হল"। আমি তখন আবার পালটা প্রশ্ন ছুড়তাম, "তোর/তোদের কেন বিশ্বাস কেউ আছে"। অদের উত্তর হত, "জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে এসে তাদের মাঝে এই উপলব্ধি হয়েছে, যে সত্যিই কেউ আছে", অথবা, "এই মহাবিশ্ব, এই বিশাল/সুবিশাল জগৎ, এটা চলছে, এর ভাঙ্গা-গড়া, এসব দেখে তাদের উপলব্ধি হয়েছে, যে কেউ না থাকলে এটা চলত না বা সৃষ্টি হত না"। তখন আমি আবার জবাব দিতাম "জীবনের এই পর্যায়ে এসে আমার উপলব্ধি হয়েছে, যে সত্যিই কেউ নাই" অথবা, "এই মহাবিশ্ব, এই বিশাল/সুবিশাল জগৎ, এটা চলছে, এর ভাঙ্গা-গড়া, এসব দেখে আমার উপলব্ধি হয়েছে যে, এর জন্য কারও প্রয়োজন নাই"।
হয়তো তর্ক আরও কিছুক্ষণ চলত,
- "তোর কি জীবনে একবারও এটা মনে হয়নি!!!!"
- "দোস্ত বিশ্বাস কর, একবারও না"
- "একটা জিনিস কি এমনি এমনি চলতে পারে, সৃষ্টি হতে পারে??"
- "আমার বিশ্বাস পারে"

Saturday, October 20, 2012

পরমকরুনাময় এবং অসীম দয়ালু চিপাল্লা এবং আমার অবিশ্বাসী পাপী মন


আমার যে ফেসবুক একাউন্ট আছে, একদিন দেখি তার ওয়ালে বিশাল এক পোস্ট শেয়ার দিয়েছে কে বা কাহারা। রোজ এই পোস্ট পার হয়ে মানুষের স্ট্যাটাস দেখতে হয়, এমনকি মানুষের সাথে ভালোভাবে যোগাযোগ করারও উপায় থাকল না। ফ্রেন্ড-লিস্টের সবাই দেখলাম ব্যাপারটা সম্পর্কে উদাসীন, এত বড় বড় পোস্ট, তা নিয়ে কারো কোন মাথাব্যথা নেই। এই টাইপ পোস্ট থাকার কারণে মানুষের স্ট্যাটাস, খবর পেতে সমস্যা হচ্ছিল, কোন মূমুর্ষ রোগীর জন্য রক্তের পোস্ট বা বন্ধুবান্ধবের জরুরি খবর দেখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পরেছিল। কিন্তু একটা সময়ে আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম, মানুষজন বেশ অভ্যস্ত হয়ে পরেছে, তারা তাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে পোস্টগুলাকে গ্রহণ করে নিয়েছে। আরও আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে, পোস্টগুলা নিয়ে বাচ্চারা বিভিন্ন কমেন্ট আর এক্টিভিজম করতে শুরু করেছে, এবং এভাবেই পোস্ট এবং পোস্ট-দাতা (ধরি তার নাম চিপ) আমার জগতে ক্রমশ একটা চরিত্রে পরিণত হল।
ঠিক করলাম পোস্টগুলা সরাতে হবে, এভাবে চলতে দেয়া যায় না। তো এসব ভেবে চিন্তে স্বপ্রনোদিত হয়েই শুরু করলাম আলোচনা। ব্লগ ফেসবুকের সিনিয়র, যারা এই পোস্টগুলাকে এই শেয়ার করার জন্য দায়ী এবং লাভবান, তারা স্বাভাবিক ভাবেই এই পোস্ট-দাতার গুণকীর্তনে লিপ্ত হল। আরও আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, একটা দল দাড়িয়ে গেল পোস্ট-দাতাকে রক্ষায়। পোস্টের নানাবিধ উপকারিতা বর্ণনা করে তারা পোস্ট-দাতাকে ফেন্ডলিস্টেই রাখার পক্ষে রায় দিল। তারা বলল, "পোস্টের জন্য যোগাযোগে অসুবিধা হচ্ছে এটা তো পোস্ট-দাতার দোষ নয়, এটা ফেসবুকের দোষ এবং মানুষের দোষ! তারা পোস্টগুলাকে জনস্বার্থে ব্যাবহার করতে পারছে না, এগুলাকে কিভাবে জনস্বার্থে ব্যাবহার করা যায় তা নিয়ে ভাবতে হবে"।

Friday, October 19, 2012

অর্বাচীনের দিনপঞ্জি...


অনেকদিন ধরেই ভাবছি, কি করা যায়, কি লিখা যায়। সহস্র চিন্তা মাথায় ভর করলে কোনটাই প্রকাশ করা হয়ে উঠে না। কিন্তু ভেতরে ভেতরে একটা অস্থিরতা কাজ করছে। কিছু একটা করা খুব খুব খুব প্রয়োজন, এখনই সময়। কিন্তু কিসের সময়?
অনেক কিছুই ঘটছে আশেপাশে। কোনটা রেখে কোনটা ধরি। একটা নদী তিতাস, তার গল্প, নাকি এক স্বামীর গল্প যে তার স্ত্রীর হাত কেটে দিয়েছে। নাকি কিছু ছাগলের স্বাধীনতা নিয়ে মাৎকার, নাকি টিপাই-মুখ...
সেইসাথে একটা ভাবনা কাজ করছে, আমি, আমার জীবন, এটি কি এতোই বিশাল যে ১৬ কোটি মানুষকে নিয়ে ভাবে? আসলে তো আমার জগত, গণ্ডী অনেক ছোট। এই ছোট ব্যাপ্তিতে যে লক্ষ-কোটি ঘটনা, সমস্যা, তা নিয়েই তো ভাবার সময় নেই। খামোখা দু'টা বড় বড় বিষয় নিয়ে বড় বড় কথা বলে, বাহবা কামিয়ে কি লাভ? কি লাভ নিজেকে মিথ্যা দিয়ে সাজিয়ে?
তারচে এই ভালো আমি আমার ছোট জগত নিয়ে থাকি, এর গল্পই বলি। আমার জীবনের গল্পগুলো ছোট-ছোট। হয়তো কাউকে স্পর্শ করবে না, হয়তো করবে। কেউ হয়তো ছোট-ছোট বোকামি নিয়ে হাসবে, কেউ ছোট-ছোট ভুল দেখে বিরক্ত হবে। মোটকথা এই আমি, আমার জীবন, এটার সম্পর্কে একটা ধারনা দেবার চেষ্টা করি বরং। বড়-বড় শিল্পীরাও তো তা-ই করে, তাদের শিল্পের মাধ্যমে। আমি ছোট মানুষ, আমারও নিজেকে, নিজের ভাবনাগুলো ছড়িয়ে দেবার এই ছোট চেষ্টা করতে কি খুব ভুল হবে? হলই না হয়। আবার এমনও হতে পারে, কেউ কেউ আমার এই ছোট-ছোট স্বপ্ন দেখা, স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে শেখা জীবনের গল্পটা পছন্দ করে ফেলল, হয়ে গেল এই অর্বাচীনের স্বপ্ন-সখা, স্বপ্ন দেখতে দোষ কি? তাই এভাবেই শুরু করছি অর্বাচীন স্বাপ্নিক-এর ডায়েরি।
আমার ইউনিভার্সিটিতে বান্ধবীর সংখ্যা একজন কি দু'জন। তার মাঝে শেষ পর্যন্ত একজনই টিকে ছিল। বলা যায় একমাত্র ও সবচে' কাছের বন্ধুদের একজন। আমাদের মধ্যে খোঁচা-খুঁচি লেগেই থাকতো। ও আমাকে বিভিন্নভাবে ক্ষেপানোর চেষ্টা করতো, আমি ওকে। বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে আমরা ছিলাম মানিকজোড়, দূর হতে কেউ দেখলে ভাবতো প্রেমিক-প্রেমিকা। মাঝে মাঝে এটা নিয়ে মজা পেতাম, বেশিরভাগ সময় বিরক্ত হতাম।

Monday, October 15, 2012

স্মৃতি তুমি বেদানার পাতা থেকে ...

(ফেব্রুয়ারী মাসে নাগরিকে প্রকাশিত...)

ভাষার মাসে (ব্যক্তিগতভাবে আমি ভাষার মাসে বিশ্বাস করি না, আমার ভাষা সারাজীবনের জন্য, প্রতিটি ক্ষণ, প্রতি মুহূর্তের জন্য।) আমার ইউনিভার্সিটি জীবনের একটা ভাষা বিষয়ক মজার অভিজ্ঞতার কথা বলতে ইচ্ছে করছে।
আমাদের এই মাটি প্রায় ২০০ বছর ছিল ব্রিটিশ শাসনের অধীনে। তাই এই ভাষাটা আমাদের জীবনের সাথে অবিচ্ছেদ্য ভাবে জুড়ে গেছে। যথারীতি আমার ইউনিভার্সিটিও একটা ইংরেজি মিডিয়াম ইউনিভার্সিটি। যার একটা ভালো দিক হল, ঘটনাটা নিজের ভাষা নিয়ে না। বত্রিশপাটির হাসি বত্রিশপাটির হাসি বত্রিশপাটির হাসি

Saturday, October 13, 2012

বিজয়


১। তিন দুই ছয়, তিন
সহস্র চৌ'শত এক ও পাঁচশত সত্তর
২। সাক্ষী ইতিহাস, যা বর্ণনা দেয় কালো রাত-এর।
৩। আপনি কি জানেন কালো রাত কি?
৪। কালো রাত হল সেই রাত যা শত-সহস্র রাত হতেও নিকৃষ্ট।
৫। এই রাতে নেকড়ের দল হামলে পড়েছিলো নিরীহ মানুষের উপর, তাদের প্রভুর নির্দেশে।
৬। হত্যাযজ্ঞ চলে সকাল পর্যন্ত

৭। অতঃপর
সৃষ্টি হয় দু'টি দলের।
৮। একদল হয় সেবক, নেকড়েদের।
৯। নিশ্চয়ই হায়েনারা পাবে প্রাপ্য শাস্তি।

১০। আর যারা সমবেত হয়েছিলো,
১১। নিজ মাতৃভূমি রক্ষায়
১২। তারা পেল বিজয়।

১৩। আর কেউ কেউ বলে প্রমাণ দেখাও।
১৪। তাদের হৃদয় করা হয়েছে সীলমোহর-কৃত
১৫। ও, তাদের চোখ, কখনোই খুঁজে পাবে না, সত্যকে।
১৬। আপনি নিশ্চিত থাকুন, তাদের শাস্তি সম্পর্কে।

১৭। আপনিই পাবেন বিজয়,
অতীতের মত।

Friday, October 05, 2012

why so serious!!!!


দিন পার হয় , পার হয় দিন....
ভাবনাবিহীন
ধুলা- ফুটপাথ , চায়ের দোকান
এই রাত্রিদিন

মানুষ , মানুষ আর মানুষের শহরে
ফিরে তাকাই না , শুধু হেটে যাই ক্লান্তিভরে
আমার জানালা -চা এর দোকান ছোট টংঘর
পর ও আপন হয় ,হয় আপন পর....

দিন পার হয় , পার হয় দিন....
ভাবনাবিহীন
খয়া চাঁদ আর ভাঙ্গা ইট কাঠ
হয়না মলিন

আছে অচেনা রাস্তারা, আছে মোবাইলে রিংটোন,আছে পরিচিত রেস্তোরা , আছে হারিয়ে যাবার মন.... আছে পোষা বিরাল - পাখি, আছে চেনা মানুষ জন , আছে ছুটে চলা ঘরি, আছে হারিয়ে যাওয়া খন.... চলবে যা ইচ্ছা তাই....

তবু আমাদের কি কি আছে তারই হিসেব করা সহয ,কারন নেই এর হিসেব কখনই শেষ হয় না ....:D:D




Monday, October 01, 2012

অসমাপ্ত গান


চলতি পথে থমকে দাড়ায়,
দু' চোখ বেয়ে রক্ত গড়ায়,
চোখের পানি বহু আগেই শুকিয়ে গেছে তার।
ভাবনা গুলো আগের মত,
বাধে না আর কোনই সুতো,
হঠাৎ করেই বাচতে চাওয়া, বিদ্রোহী আত্মার।।

ছেলেটা খুঁজে যায় সে-সময় বারে বার,
ছেলেটা পেতে চায়, অতীতটাকে আবার।


বাড়ছে খরচ বেচে থাকার,
গতি বাড়ছে জীবন চাকার,
কমছে শুধু মানুষ হয়ে বাচার অঙ্গীকার।
পায় যে ভয় আজ দেখতে আকাশ,
শুকতে শিশির ভেজা বাতাস,
হয়ে গেছে সবকিছু আজ নষ্টর অধিকার।

ছেলেটা খুঁজে যায় সে-সময় বারে বার,
ছেলেটা পেতে চায়, অতীতটাকে আবার।

Thursday, September 27, 2012

বিপ্লব

১। অতঃপর তাহারা কহিল, এই কার্য আমাদের নহে।
২। কসম মানবজন্মের, যা তোমাদের করেছে সৃষ্টির সেরা এবং দিয়েছে বিবেচনা শক্তি।
৩। আপনি কি জানেন না ভারতবর্ষের ইতিহাস?
৪। সাধারণ মানুষ ছিল রাজনীতি হতে দূরে এবং যুদ্ধ হতো শুধুই রাজ-সেনাদলের মধ্যে।
৫। বিনিময়ে তারা পেয়েছিল নীলচাষের মতন অভিশাপ।
৬। এবং কেউ কেউ বলে ওদের আন্দোলনে আমাদের অংশগ্রহণ নাই।
৭। আভ্যন্তরীণ কোন্দল ভারত-জাতীকে করেছিল দুর্বল বহিঃশত্রুর মোকাবেলায়; এবং এনেছিলো ব্রিটিশ শাসন।
৮। আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন ভারত-বিভাগ সম্পর্কে, যা ছিল শাসকদের সিদ্ধান্ত এবং সাধারণ মানুষকে বাধ্য করেছিল জন্মস্থান ছেড়ে যেতে।
৯। নিশ্চয়ই ব্যক্তিগত শত্রুতা জাতিগত-ভাবে ক্ষতিকর।
১০। হে বান্দাসকল, কসম তোমাদের; তোমাদের সামনে রয়েছে এক কঠিন পরীক্ষা।
১১। তোমাদের যাদের রয়েছে বিবেচনা (এবং জ্ঞান) তারা অবশ্যই ভুলে যাবে ব্যক্তিগত মতানৈক্য এবং করবে আরও শক্তিশালী, আন্দোলনকে।
১২। নিশ্চয়ই তোমার জানা আছে প্রতিটি পদক্ষেপ, ঘরের শত্রুর।
১৩। এবং যাকে পরাস্ত করার সুযোগ পাবে তুমি ভবিষ্যতেও, যদি পাও বিজয় বহিঃশত্রুর আক্রমণের বিরুদ্ধে।
১৪। হে বান্দাসকল, কসম মানবজাতির ইতিহাসের, ক্ষমতা সর্বদাই মানুষকে করে অন্ধ এবং তাকে করে অবিবেচক।
১৫। তুমি কি জান জর্জ অরওয়েল-এর নাম? যিনি বলে গেছেন রাশান জাতির গল্প এবং বলেছেন কিভাবে বিপ্লবের নেতারা একে একে নিমজ্জিত হয়েছিল ক্ষমতার মোহে।
১৬। তুমি কি অস্বীকার কর তাদের অন্ধত্বের কথা!
১৭। নিশ্চয়ই জানবে ক্ষমতার মোহ থেকে মুক্ত নয় সবচেয়ে সেরা তত্ত্বের অনুসারী-গনও। (কারণ তাদেরও রয়েছে মানবীয় ত্রুটিসমুহ)
১৮। হে বান্দাসকল, বিবর্তন তোমাকে দিয়েছে বিবেচনা আর তোমাকে দিয়েছে জ্ঞান ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেবার।
১৯। সুতরাং কিরূপে তাহারা দাবি করে এই কার্য তাহাদের নয়, যখন তাহারাও এই মানবজাতিরই অন্তর্গত।
২০। ক্ষমতার মোহে পথভ্রষ্ট নেতা-গনের কাছে কিরূপে তাহারা সমর্পণ করে দায়িত্বের!
২১। তবে তারা কি এতই অবিবেচক যে দাবি করে সকল দায়িত্ব সরকারের, তাদের নয়!
২২। এবং এভাবেই তারা পাশ কাটিয়ে যায়।
২৩। এবং তারা জানে না তারা এভাবেই ডেকে আনছে ধংস, নিজেদেরই।
২৪। হে বান্দাসকল তোমাদের আছে সুবিবেচনা এবং তোমাদের আছে আলোর পথের সন্ধান।
২৫। অতএব: স্বীয় কার্য তোমরা এড়াইয়া চলিও না।
২৬। এখনই নাও পদক্ষেপ, চালাইয়া যাও যুদ্ধ। (আন্দোলন)
২৭। নিশ্চয়ই জানবে তোমাদের জন্য আছে পুরষ্কার, একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ।

আমার দুনিয়া দর্শন ....

সবাই একই রকম স্মার্ট হয়ে দুনিয়াতে আসতে পারে না। আফসোস আমি নিম্ন মানের আই-কিউ নিয়া দুনিয়াতে আসছি, তাই সেই ছোটবেলা থেকে ভুগছি।এই দুনিয়ার হালচাল আমি বেশীর ভাগ ই বুঝি না, আর বুঝলেও যেগুলা কঠিন মনে হয় সেগুলা মনে রাখতে পারি না।

প্রথমেই ছোটবেলার কথা ধরা যাক, আমি যে একটা মেয়ে সেটা আমাকে বার বার মনে করায় দেয়া আর বাচ্চা মেয়েদের কার্যকলাপ বার বার শিখানো সত্ত্বেও আমি সেটা মোটেও মনে রাখতে পারতাম না । শেষ পর্যন্ত সবাই হাল ছেরে দিলো....
একটু বড় হয়ে আমি পড়াশুনার দুনিয়ায় বেশী সুবিধা করতে পারলাম না। কখনো খুব ভালো ত কখনো খুব খারাপ, খুব মনোযোগ দিয়া মুখস্থ করতে পারতাম না....
কলেজে প্রেম করা হয়নি প্রেম বুঝি না বলে....

আর এখন ত দুনিয়ার বেশির ভাগ জিনিস ই বুঝি না....

আমি যে কত মানুষকে ডিসাপয়েন্টেড করেছি সেটা ভাবলে নিজের-ই ভয় লাগে। কিন্তু এই সহজ সত্যটা কেউ বুঝে না যে এইটা ইচ্ছাকৃত না.... বরং আমার নিম্ন আই কিউ লেভেল এর জন্য।আর বুঝলেও মানুষ মোটেও মানতে চায়না যে দুনিয়াতে লো আই-কিউ নিয়াও কেউ পয়দা হইতে পারে ।
তো যেই কথা বলতেছিলাম  , কথা হচ্ছে আমার দুনিয়া দেখা নিয়ে আর আজকে আমি মুডে আছি আমার নারী  দর্শন নিয়া কিছু নিম্ন আই-কিউ এর কথা বলতে। কারণ আজকেই কই জানি দেখলাম কে জানি মেয়েদের কাপর চোপরের মাপ নিয়া তাদের চরিত্র মাপতেছে ....lol.... এরচে হাস্যকর আরেক জায়গায় দেখেছি, গর্ভপাত করার সময় নাকি জরায়ুতে একটা বড় কাচি ঢুকায় কেটে কেটে বাচ্চা বের করে। বিচিত্র এই দুনিয়া, বিচিত্র আমার ফেবুর হোম পেজ- এইখানে ধর্মানুভুতিতে আঘাত পাওয়া আহত নিহত ব্যক্তির চিৎকার আছে , বাক-স্বাধীনতার জোরালো দাবী আছে, কবি আর প্রেমিক আছে, দুষ্ট বালক-বালিকারা আছে , ইয়ো-রা আছে , আতেল আছে , অবিশ্বাসী কাফের-রা আছে আর তারচেয়েও বেশী আমার ভালো বন্ধুরা আছে।

এখন বাংলাদেশের মেয়দেরকে দেখা বলতে, আমার স্কুল-সিটি রাজশাহী, নানার বাড়ি, হোস্টেল আর ঢাকার সব জায়গার মেয়দেরকে দেখা বুঝায়; এর বাইরে বিশাল বাংলা অনাবিষ্কৃত। তো কি দেখলাম আমি আমার ছোট্ট বাউন্ডারি তে (আমিও এই এরিয়া এর একজন) - আসলে মেয়েরা চাইলেই তাদের পছন্দের কাছা কাছি একটা জীবন কাটাতে পারছে কিন্তু পুরাপুরি না। তারা ইচ্ছা করলেই সামনে বিশাল পানি দেখলে মোজা-জুতা পরে ঝাঁপিয়ে পরতে পারে না, কিন্তু ইচ্ছা মত বৃষ্টিতে ভিজতে পারে । আসলে উদাহরণ দিয়ে লাভ নাই খুব সূক্ষ্ম কিছু ব্যাপার স্যাপার। কিন্তু কথা হল এই সূক্ষ্ম মাপজোখ-এ আমি তখনই বসব যখন সবকিছু একই লেভেলে থাকবে কিন্তু আমার মনে হয় না একই লেভেলে আছে....

প্রতিদিন রেপ , এসিড নিক্ষেপ , যৌতুক এর দাবীতে অত্যাচার আর খুন, পাচার আর বিক্রি একটা রেগুলার ঘটনা এবং শহরে আধুনিক কোন মেয়ে বা আপনাদের ভাষায় উশৃংখল মেয়েরা ইভ-টিজিং এর শিকার হওয়াটা বরং অনেক রেয়ার। তাহলে খামোখাই মানুষের ব্যক্তিগত পোশাক-আশাক, তার নিজের মত করে একটু জীবন কাটানো দেখে আপনাদের গালাগালির কারণ কি?? বরং যেসব এলাকায় এইধরনের ক্রাইমের প্রাদুর্ভাব বেশী সেখানকার মেয়েরা শালীন পোশাক-ই পরে আর বিনা প্রয়োজনে বাইরেও যায়না....তবু তারা রক্ষা পায় না....

আমার নিম্ন আই কিউ এ মনে হয় কারণটা আপনাদের অবদমিত কামনা বাসনা আর না পাওয়ার ক্ষোভ ....তাই কি??

এখানে নারীবাদ এর প্রয়োজন নাই বরং সবাইকে মানুষ হিসাবে না ভাবতে পারার ব্যর্থতা আছে। পুরুষ-বাদ মেয়েদেরকে চিপা দিয়ে নিচে নামাইতে চায় আর নারীবাদ নারীকে ঠেলে উপরে তুলতে চায়। কিন্তু মানুষ হিসাবে পাশাপাশি কি তারা কখনো দাঁড়িয়েছে!!!! আমি জানি না ; অবশ্য আমি দুনিয়ার বেশীরভাগ জিনিস ই জানি না....

ভেবে দেখলাম আমি যেমন অনেককে হতাশ করেছি, আমি নিজেও কম ডিসাপয়েন্টেড হই নাই....

পৃথিবীর এই কর্নারে ছোট্ট একটা দেশ আছে বাংলাদেশ যেখানে সবকিছু অনেক অন্যরকম , জীবন কঠিন কিন্তু মাঝে মাঝে ভীষণ সুন্দর। কেউ কি আমার মত লো আই কিউ নিয়ে আমার দেশকে দেখে!!!! জানতে ইচ্ছে করে....

Wednesday, September 26, 2012

২৫/০৩/০৮_৫

কাঠ ফাটা রদ্দুর
হাঁটি আমি যদ্দূর,
পদ ধুলি রেখে পথে
যাব আর কদ্দূর!!

Monday, September 24, 2012

একখানা অর্বাচীন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার...

আমার একটা নতুন রোগের উপসর্গ দেখা দিয়াছে। ইহা নাকি খাদ্য গ্রহণে অনিয়ম করার ফসল। ইহার ফলে, ২/৩ দিন পরপর পশ্চাৎদ্বেশের বহিরা-ভরন ছিঁড়িয়া যাইবার উপক্রম হয়। বিশ্বস্ত সূত্রে জানিতে পারিলাম, আরও অনেকেরই এই ব্যাধি রহিয়াছে, কিন্তু চক্ষুলজ্জার ভয়ে তাহা তারা প্রকাশ করিতে চাহেন না। এই সমস্যার সমাধানে তাহারা একটা ক্ষতিকর বস্তুর শরণাপন্ন হন, যাহাকে প্রকারান্তরে অনেকে সিগারেট/বিড়ির মাধ্যমে গ্রহণ করেন। উহা হইল নিকোটিন। এই নিকোটিন নামক বস্তুর সহিত যদি গরম দুগ্ধ মিশ্রিত চা বৃক্ষ-পত্রের নির্যাস গ্রহণ করা হয়, তবে নাকি ইহা আরও কার্যকর ভূমিকা রাখে। কিন্তু, নিকোটিন নামক এই ক্ষতিকর বস্তুটিতে অভ্যস্ত হইয়া গেলে, অন্য এক প্রকার যন্ত্রণার সম্মুখীন হইবার আশংকা থাকে, তাহা হইল, যখনই এই বস্তু গ্রহণ করা হয়, তখনই আপনার জৈবিক বর্জ্য আপনার শরীর হইতে নিষ্ক্রান্ত হইবার প্রয়াসে আপনার পশ্চাৎ নির্গমন পথে আসিয়া চাপ প্রয়োগ করিতে থাকে।


আমি তাই একখানা বিকল্প সমাধান খুঁজিয়া পাইতে উদ্যোগী হই। এবং যথেষ্ট গবেষণা পূর্বক একখানা ফর্মুলা আবিষ্কার করিতে সক্ষম হইয়াছি। ইহা এখন পর্যন্ত কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় নাই।


ফর্মুলাখানা রতের খাদ্যগ্রহণের সময় ঘি সহযোগে গ্রহণ করিতে হয়। আপনি কি ঘন ডাউল নামক খাদ্যবস্তুটির সহিত পরিচিত? ইহা গরম ভাতের সহিত অতি উপদেশ খাদ্য বলিয়া প্রতীয়মান। ইহা রাঁধিবার পূর্বে কিছু পরিমাণ অতিরিক্ত প্রস্তুতি লইলেই আপনার চলিবে। পুই-এর শাক বলিয়া এক প্রকার সবজি আছে, তাহা প্রয়োজন অর্ধ কিলোগ্রাম পরিমাণ, ঢেঁড়স বা ভেন্ডী নামক সবজি প্রয়োজন আরও অর্ধ কিলোগ্রাম পরিমাণ। এই পুই-এর শাক আনিয়া, যথেষ্ট পানি সহযোগে উত্তমরূপে ধুইয়া নিন। এর পর এর পত্রগুলি ডাল হইতে ছিঁড়িয়া একটি পাত্রে জমা করিতে থাকুন। পুই-পত্রের আকার যদি অতিরিক্ত বড় হয়, তবে তাহাকে হস্ত প্রয়োগের মাধ্যমে দুই টুকরা করিয়া ছিঁড়িয়া ফেলা উত্তম। সমস্ত ডাল যখন পত্র-পল্লব বিচ্যুত হইয়া যাইবে, ডাল গুলোকে তখন, ২.৫ হইতে ৩ ইঞ্চি লম্বা লম্বা টুকরায় কাটিয়া পাত্রে জমা করুন। ইহার পর, ২/৩ জন ব্যক্তির উপযুক্ত পরিমাণ ঘন ডাল, রান্নার নিমিত্তে মশলা সহযোগে, চুলার উপর চড়াইয়া দিন। কিন্তু লবণ দিন স্বাভাবিকের দেড়/পৌনে দুই গুন, এবং পুই গুল্মলতার যেই ডালগুলি আপনি পূর্বেই আলাদা করিয়া রাখিয়াছিলেন, তাহাও এই ডালের সহিত যোগ করিয়া দিন। এবং রাঁধিতে থাকুন। রান্না প্রায় হইয়া আসিলে তাহাতে পুই-পত্র যোগ করুন এবং একটু নাড়িয়া অল্প আচে ঢাকুনি দিয়া রাখুন। কিছুক্ষণ পর পর নাড়িয়া দিতে থকুন যতক্ষণ না পুই-পত্র সম্পূর্ণ রূপে সিদ্ধ হইয়া গলিয়া যাইবার উপক্রম হয়।


এইদিকে যে ভেন্ডী আপনি আনিয়াছিলেন, তাহা কি হইবে? এই ভেন্ডী গুলাকেও উত্তমরূপে ধুইয়া লন এবং অর্ধ সেন্টিমিটার পুরু কুচিকুচি করিয়া কাটিয়া ফেলুন। তাহাতে খুবই স্বল্প পরিমাণ হলুদ দিয়া ভাজিয়া ফেলুন, যেন তাহার রং সবুজ থাকে। এর পর ভাত চড়াইয়া দিন। ভাত রাধা শেষ হইয়া গেলে বাসন লইয়া খাদ্য-গ্রহণের, প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।


ধোয়া উঠা গরম ভাত বাসনে লইয়া তাহাতে ঘি যোগ করুন এবং কিছুটা লবণ বা নুন যোগ করুন। এবং দ্রুত মাখিয়া ফেলিয়া দুই এক নলা পরিমাণ খাইয়া ফেলুন। লক্ষ্য করুন, যে ঘি মিশ্রিত এই ভাতের স্বাদে কেমন আমোদ লাভ করা যায়। ইহার করনেই সম্ভবত শাস্ত্রে ঋণ করিয়া ঘি খাইবার কথা বলা হইয়াছে। তাহার পর ঘি-মিশ্রিত ভাতে প্রচুর পরিমাণে পুই-এর ডাল এবং ভেন্ডী যোগে একসাথে মাখাইয়া খাদ্য গ্রহণ করুন। উল্লেখ্য, ফর্মুলার কার্যকারিতা পাইতে, আপনার প্রতিদিনের ভাত গ্রহণে চাইতে সোয়া এক গুন বেশি খাদ্য গ্রহণ করা আবশ্যক।


ইহার পর একখানা ঘুম দিন। প্রত্যুষে উঠিয়া আপনার প্রাতঃকৃত্য সরিতে যান। দেখিবেন, আপনার পশ্চাৎদ্বেশের বহিরা-ভরন ছিঁড়িয়া যাইবার উপক্রম আর হইতেছে না, বরং একখানা মোলায়েম অনুভূতির সহিত আপনার জৈবিক বর্জ্য আপনার শরীর হইতে নিষ্ক্রান্ত হইতেছে।

ইহাই হইল আমার ফর্মুলা। আমি এই যুগান্তকারী ফর্মুলা আবিষ্কারের উপর একখানা বৈজ্ঞানিক জার্নাল প্রকাশের পঁয়তারা করিতেছিলাম, কিন্তু আমার কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী কইলেন, আমি যেন ইহা মুখচ্ছবি নামক একখানা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণার্থে উন্মুক্ত করিয়া দেই। ইহা ছাড়া তাহারা আরও কহিলেন, যেন, ইহা লইয়া একখানা প্রবন্ধ, ব্লগ নামক আন্তর্জাতিক দিন-পঞ্জিকায় প্রকাশ করিতে সচেষ্ট থাকি। তাহা হইলে জনকল্যাণ মূলক অবদানের কারণে আমার বিদেশ যাইবার পথ সুগম হইয়া যাইবে। এমনকি, আমি নাকি জনকল্যাণ মূলক অবদানের করনে শান্তিতে নোবেল পদকও পাইয়া যাইতে পারি, প্রধানমন্ত্রীর এই পদক লাভের পরপরই। আপাতত নোবেল কমিটি তাহার দালালের আবেদনটি বিবেচনাতে ব্যস্ত আছেন। তবে, আমার বিদেশ যাইবার গোপন বাসনাকে সফল করিতে আপনারা পছন্দ ও মন্তব্য করিয়া সহযোগিতা করিতে পারেন। কারণ শুনিয়াছি, কোন এক মর্কট নাকি আমাকে নিজ বিদেশ গমনের চেষ্টায় হুমকি স্বরূপ মনে করিয়া শত্রুতা মূলক ভাবে অপ-প্রচারণায় নামিয়াছে।

যদিও আমার তাহার প্রতি কোনরূপ ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নাই, তবু সে আমাকে কেন তাহার জনপ্রিয়তার প্রতি হুমকি স্বরূপ মনে করিয়া থাকে সেটা উক্ত মর্কটই বলিতে পারিবে। অতএব, আমি ঐ মর্কটকেও এইটা জানাইয়া দিতে চাই, কে প্রকৃত জনকল্যাণ মূলক কাজ করিতেছে তাহার বিচার করিতে জনগণ আছেন। নিজেই নিজেকে বিশেষ সমাজসেবী দাবি করিয়া চিৎকার করিয়া গেলে কোনরূপ ফল-লাভ হইবে না। জেলে কাটাইয়া কেউ মহান হইতে পারে না, কেউ ইহাকে মহান বলিয়া প্রচার চালাইলেও উহা প্রকৃত মহান কর্ম কি না তাহা পুলিশের রিপোর্ট জনগণের সম্মুখে আসার পরই প্রতীয়মান হইবে। ছিচকে চোর যদি চুরির নিমিত্তে পুলিশের হাতে উত্তম-মধ্যম লাভ করে এবং পূর্বের জনকল্যাণমূলক কাজের জের হিসেবে প্রকাশ করে, তাহা জনগণ কিছুদিন বিশ্বাস করিলেও পরে আসল সত্য প্রকাশ হইয়া যায়। এক সময়ের বঙ্গবীর পরে তস্করে পরিণত হইতে পারে, এবং পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হইতে পারে। ইহা কোনরূপেই জনকল্যাণের নিমিত্তে গ্রেপ্তার হইতে পারে না। জনগণের যানবাহন ভাঙচুর, পথ চলাচলে বাধার সৃষ্টি করার কারণে গ্রেপ্তারকে কেউ সুকৌশলে জনকল্যাণের কারণে প্রতিহিংসামূলক গ্রেপ্তার বলিয়া প্রচার করিতেই পারে, কারণ থানায় পুলিশের সাথে প্রকৃত কি ঘটনা ঘটিয়াছিল তাহা এখনও লোকচক্ষুর অন্তরালেই রহিয়াছে। যে কোন ভাল গল্পকার কোন গোপন ঘটনাকে ইচ্ছা মতন কল্পনার নিরিখে সাজাইতে পারে। আসল ঘটনার প্রকাশ পাইবে যদি ঠাকুর ঘরে কে রে বলার সাথে সাথেই কেউ আমি কলা খাইনি বলিয়া চিৎকার করিতে থাকে...

Sunday, September 23, 2012

ভাবনার সেকাল আর একাল...


এখনকার মানুষের, না আসলে যুবা বয়সের মানুষদের ভাবনার গভীরতা কম বলে আনেকেই অভিযোগ করেন। আমার এই ব্যাপারে নিজস্ব একটা থিওরি আছে। আসলে মানুষের ভাবনার গভীরতা কখন বাড়বে? যখন সে ভাবার সময় পাবে। একটা সময় ছিল, যোগাযোগ বলতে কেবল চিঠিই ছিল। একটা চিঠি যেতে আর তার উত্তর আসতে সময় লাগত কমপক্ষে ৬ দিন। একটা বিশাল সময় পার হত জল্পনা-কল্পনায়, প্লানিং-এ। উত্তর কি আসতে পারে, কোন কথার উত্তরে কি লিখব, কোন কোন কথা বাকি রয়ে গেল, এসব। এছাড়া জমানো কথাগুলো এক-দেড় পৃষ্ঠার একটা চিঠিতে গুছিয়ে লিখার মত ব্যাপার-ও ছিল।

কিন্তু এখন আর সেই দিন নেই। ই-মেইল যায় চোখের পলকে, কিন্তু সেটিও এখন শুধু অফিসিয়াল কাজেই ব্যবহার হয়। তারচে বেশি চলে, চ্যাট। অথবা ইচ্ছে হলেই ফোন। সেটিও আবার মোবাইল, মানুষের সাথে সাথেই ঘুরছে। তো যখন যে কথা মনে আসে ইচ্ছে হলেই বলে ফেলা যায়। চিন্তা করার সময় কোথায়? হয়তো একারণেই ভাবার সময়ও মানুষ এখন কম পায় আর ফলশ্রুতিতে, ভাবনার গভীরতাটাও কম মনে হয়। আসল কথা হল, আগে আমদের মাথায় একটা ভাবনা বা আইডিয়া আসত, সেটার রাফ ছোট-ছোট কথা জমা হত, সেটাকে ফ্রেশ করে, মনে জমে থাকা কথাগুলোই সাজিয়ে গুছিয়ে ফ্রেশ করে প্রকাশ করতাম। আর এখন মাথায় একটা আইডিয়া আসা মাত্রই সেটা আমরা বলে ফেলি, আরও মনে আসা মাত্রই আবারও ফোন করে জানিয়ে দিব। সবগুলোই রাফ, কোন ফ্রেশ করে বলার ব্যাপার নেই।

আসলে গভীরতাটা কোন বিষয় না, বিষয় হল উপস্থাপন। আগে ফ্রেশ বা নির্যাসটা গুছানো অবস্থায় সরাসরি পেতাম এখন আর পাই না। গুছিয়ে নিলেই সবকিছুর গভীরতা আগের মতই লাগবে। তবে এখন যদি কেউ প্রশ্ন করে, রাফ থেকে ফ্রেশ করার সময় কিছু ভুল আমরা নিজেরাই শুধরে নিতাম, আরও পরিমার্জন-পরিবর্ধন করা হত, তার কি হবে? সেটার উত্তর আমার জানা নেই, দুঃখিত।


Monday, July 02, 2012

রাজনীতির সেকাল আর একাল


এই তো, মাত্র কয়েক বছর আগে... ১৯৮১ সালের একটি ঘটনা....
একটা সাধারণ টিভি সাক্ষাতকার...

Sunday, July 01, 2012

Get a PhD on Google