Sunday, September 23, 2012

ভাবনার সেকাল আর একাল...


এখনকার মানুষের, না আসলে যুবা বয়সের মানুষদের ভাবনার গভীরতা কম বলে আনেকেই অভিযোগ করেন। আমার এই ব্যাপারে নিজস্ব একটা থিওরি আছে। আসলে মানুষের ভাবনার গভীরতা কখন বাড়বে? যখন সে ভাবার সময় পাবে। একটা সময় ছিল, যোগাযোগ বলতে কেবল চিঠিই ছিল। একটা চিঠি যেতে আর তার উত্তর আসতে সময় লাগত কমপক্ষে ৬ দিন। একটা বিশাল সময় পার হত জল্পনা-কল্পনায়, প্লানিং-এ। উত্তর কি আসতে পারে, কোন কথার উত্তরে কি লিখব, কোন কোন কথা বাকি রয়ে গেল, এসব। এছাড়া জমানো কথাগুলো এক-দেড় পৃষ্ঠার একটা চিঠিতে গুছিয়ে লিখার মত ব্যাপার-ও ছিল।

কিন্তু এখন আর সেই দিন নেই। ই-মেইল যায় চোখের পলকে, কিন্তু সেটিও এখন শুধু অফিসিয়াল কাজেই ব্যবহার হয়। তারচে বেশি চলে, চ্যাট। অথবা ইচ্ছে হলেই ফোন। সেটিও আবার মোবাইল, মানুষের সাথে সাথেই ঘুরছে। তো যখন যে কথা মনে আসে ইচ্ছে হলেই বলে ফেলা যায়। চিন্তা করার সময় কোথায়? হয়তো একারণেই ভাবার সময়ও মানুষ এখন কম পায় আর ফলশ্রুতিতে, ভাবনার গভীরতাটাও কম মনে হয়। আসল কথা হল, আগে আমদের মাথায় একটা ভাবনা বা আইডিয়া আসত, সেটার রাফ ছোট-ছোট কথা জমা হত, সেটাকে ফ্রেশ করে, মনে জমে থাকা কথাগুলোই সাজিয়ে গুছিয়ে ফ্রেশ করে প্রকাশ করতাম। আর এখন মাথায় একটা আইডিয়া আসা মাত্রই সেটা আমরা বলে ফেলি, আরও মনে আসা মাত্রই আবারও ফোন করে জানিয়ে দিব। সবগুলোই রাফ, কোন ফ্রেশ করে বলার ব্যাপার নেই।

আসলে গভীরতাটা কোন বিষয় না, বিষয় হল উপস্থাপন। আগে ফ্রেশ বা নির্যাসটা গুছানো অবস্থায় সরাসরি পেতাম এখন আর পাই না। গুছিয়ে নিলেই সবকিছুর গভীরতা আগের মতই লাগবে। তবে এখন যদি কেউ প্রশ্ন করে, রাফ থেকে ফ্রেশ করার সময় কিছু ভুল আমরা নিজেরাই শুধরে নিতাম, আরও পরিমার্জন-পরিবর্ধন করা হত, তার কি হবে? সেটার উত্তর আমার জানা নেই, দুঃখিত।


No comments:

Post a Comment