Skip to main content

অর্বাচীনের দিনপঞ্জি...


অনেকদিন ধরেই ভাবছি, কি করা যায়, কি লিখা যায়। সহস্র চিন্তা মাথায় ভর করলে কোনটাই প্রকাশ করা হয়ে উঠে না। কিন্তু ভেতরে ভেতরে একটা অস্থিরতা কাজ করছে। কিছু একটা করা খুব খুব খুব প্রয়োজন, এখনই সময়। কিন্তু কিসের সময়?
অনেক কিছুই ঘটছে আশেপাশে। কোনটা রেখে কোনটা ধরি। একটা নদী তিতাস, তার গল্প, নাকি এক স্বামীর গল্প যে তার স্ত্রীর হাত কেটে দিয়েছে। নাকি কিছু ছাগলের স্বাধীনতা নিয়ে মাৎকার, নাকি টিপাই-মুখ...
সেইসাথে একটা ভাবনা কাজ করছে, আমি, আমার জীবন, এটি কি এতোই বিশাল যে ১৬ কোটি মানুষকে নিয়ে ভাবে? আসলে তো আমার জগত, গণ্ডী অনেক ছোট। এই ছোট ব্যাপ্তিতে যে লক্ষ-কোটি ঘটনা, সমস্যা, তা নিয়েই তো ভাবার সময় নেই। খামোখা দু'টা বড় বড় বিষয় নিয়ে বড় বড় কথা বলে, বাহবা কামিয়ে কি লাভ? কি লাভ নিজেকে মিথ্যা দিয়ে সাজিয়ে?
তারচে এই ভালো আমি আমার ছোট জগত নিয়ে থাকি, এর গল্পই বলি। আমার জীবনের গল্পগুলো ছোট-ছোট। হয়তো কাউকে স্পর্শ করবে না, হয়তো করবে। কেউ হয়তো ছোট-ছোট বোকামি নিয়ে হাসবে, কেউ ছোট-ছোট ভুল দেখে বিরক্ত হবে। মোটকথা এই আমি, আমার জীবন, এটার সম্পর্কে একটা ধারনা দেবার চেষ্টা করি বরং। বড়-বড় শিল্পীরাও তো তা-ই করে, তাদের শিল্পের মাধ্যমে। আমি ছোট মানুষ, আমারও নিজেকে, নিজের ভাবনাগুলো ছড়িয়ে দেবার এই ছোট চেষ্টা করতে কি খুব ভুল হবে? হলই না হয়। আবার এমনও হতে পারে, কেউ কেউ আমার এই ছোট-ছোট স্বপ্ন দেখা, স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে শেখা জীবনের গল্পটা পছন্দ করে ফেলল, হয়ে গেল এই অর্বাচীনের স্বপ্ন-সখা, স্বপ্ন দেখতে দোষ কি? তাই এভাবেই শুরু করছি অর্বাচীন স্বাপ্নিক-এর ডায়েরি।
আমার ইউনিভার্সিটিতে বান্ধবীর সংখ্যা একজন কি দু'জন। তার মাঝে শেষ পর্যন্ত একজনই টিকে ছিল। বলা যায় একমাত্র ও সবচে' কাছের বন্ধুদের একজন। আমাদের মধ্যে খোঁচা-খুঁচি লেগেই থাকতো। ও আমাকে বিভিন্নভাবে ক্ষেপানোর চেষ্টা করতো, আমি ওকে। বন্ধু-বান্ধবীদের কাছে আমরা ছিলাম মানিকজোড়, দূর হতে কেউ দেখলে ভাবতো প্রেমিক-প্রেমিকা। মাঝে মাঝে এটা নিয়ে মজা পেতাম, বেশিরভাগ সময় বিরক্ত হতাম।
ভূমিকা শেষ করি ভালো, এবার আমি মুল গল্পে আসি। আমার এই দোস্তটার একটা ব্যাপার আমার খুব ভালো লাগতো, যে কারণে আমি ওর সাথে খাতির বজায় রাখতাম। তা হল, ও ছিল প্রাণ-চাঞ্চল্যে ভরপুর। যতোই মন খারাপ হোক, হতাশা গ্রাস করুক, ওর কাছে এলে যে কেউ প্রাণের ছোঁয়া পেয়ে যেত। এই ব্যাপারটা নিয়ে আমার সব সময়ই একটা বিস্ময় কাজ করতো। ওকেও এটা বলেছি অগণিত বার, ও খালি হাসত। এই কারণেই দোস্তটার আরেকটা নাম দিয়েছিলাম, তা হল মুগ্ধ (এই নামে ডাকলে ক্ষেপে যেত, প্রেমিকা প্রেমিকা লাগে নাকি। ) যদিও মুগ্ধতা ব্যাপারটা আমার মধ্যেই বেশি কাজ করত।
এই মুগ্ধ ছিল আমার দেখা মুক্তমনা মেয়েদের একজন। ওকে আমি কথায় কথায় খেপাতাম আবার মনে মনে শ্রদ্ধাও করতাম। মুগ্ধ ছিল বিবাহিত। ওর বর আমাদের সিনিয়র, আমাদের বন্ধু মহলে উনাকে গুরু বলে মানতাম। এত স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গির মানুষ আমি খুব কমই দেখেছি। কিন্তু তার গল্প অন্যদিন বলা যাবে।
দোস্তকে আমি মাঝে মাঝে খেপাতাম,
"তুই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে কি করবি?", ওর জবাব, "চাকরি করব"। "কিন্তু তুই চাকরি করবি ক্যান? তোর জামাই কি ফকির নাকি?" ও বলতো "ফকির না, কাছাকাছি।" আবার কিছুক্ষণ পর, "দোস্ত, তোর যদি অনেক টাকা হয় তবুও চাকরি করবি?" ওর সরল জবাব "হ্যাঁ"। "তখন তো তোর টাকার দরকার নাই।" "নিজের জন্য চাকরি করব।" এইবার খোঁচা দিই, "নিজের জন্য মানে কি? বললেই হয় চাকরি না করলে স্ট্যাটাস থাকে না তাই চাকরি করবি। আমাদের জন্য চাকরিটা একটা প্রয়োজন, আর তোর জন্য স্ট্যাটাস"। এইবার ক্ষেপে গেল "না! মোটেও না! আমি এতো পড়াশোনা করলাম, এগুলো কাজে লাগাতে হবে... আমি একটা মানুষ, আমার একটা পুর্ণাঙ্গ পরিচয় আছে, এটার কারণেই চাকরি করব। আমার পক্ষেও সম্ভব ছেলেদের মতোই নিজের ভার নিজের নেয়া... শুধু ছেলেরাই ইনকাম করবে নাকি? মেয়েরা কি ঘরে আটকা থাকবে? কি ভেবেছিস? আমি ঘরে থাকা মেয়ে না। আমার মেধা আমার মনন ..." আমি হো হো করে হেসে উঠি, ওকে শেষ করতে দেই না। "হাহাহাহা এতো কঠিন কঠিন কথা কই থেকা শিখছিস? বই থেকে মুখস্থ করসিস নাকি? হাহাহাহা তুই কি এইসব মুখস্থ ওয়ার্ড ইউজ করে কথা বলিস নাকি? হাহাহাহাহা"
ও অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখত, আমি ছোট ছোট। ও সুনীলের কবিতা পড়ত, আবৃত্তি শুনত। আমার দৌড় নীল-দরিয়া টাইপ ফোক গান। ও যেত ফটো, আর্ট একজিবিশনে, আমি কনসার্টে। ওর বাকি বন্ধু-বান্ধবরাও একই টাইপের। আমি এড়িয়ে চলতাম। ওর বাইরের বন্ধুরা সব ঢাকা ভার্সিটি, জাহাঙ্গীরনগর, বুয়েট। আমি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির কূপমণ্ডূক। আমি ওদের সাথে মিশতে পারি না। ওদের কথাবার্তা খুব কঠিন লাগে। বিশ্ব, সমাজ-সংসার নিয়ে আমি ভাবি না। আমার জগত আমার ছোট গণ্ডির ভেতর। আমার গীটার, আমার গান, আমার কম্পিউটার, আমার বন্ধু, আমার ভার্সিটির আড্ডা, চায়ের দোকান, এসব নিয়েই আমার দিন কাটে।
মনে আছে, একবার আমি বলেছিলাম, বেশিরভাগ মেয়েদের টেকনিকাল জবের যোগ্যতা নেই, তাই ওরা টেকনিকাল জব পায় না। এই নিয়ে লাগল বিশাল তর্ক। ওর বক্তব্য, পুরুষরা সুযোগ দেয় না বলেই জবের এই অবস্থা। ওর কথা, এখন মেয়েরা জেগে উঠছে, সবাই তো একসাথে বদলে যায় না, ধীরে ধীরে সবাই বদলাচ্ছে। ও নিজেকে ওই অগ্রগামী মেয়েদের একজনই ভাবতো। আমি সেদিন খুব জোর তর্ক করেছিলাম। সুযোগ দিতে হবে কেন। যদি যোগ্যতা থাকে তো আমাদের হারিয়েই চাকরি পাবে। কিন্তু মনে মনে সেদিন স্বপ্ন দেখছিলাম, যে আসলেই মেয়েরে বদলাচ্ছে। আমি এই অগ্রগামীদের একজনের সাথেই মিশছি ভেবে খুব গর্ব হয়েছিল সেদিন।
ভার্সিটির পর ও ব্যস্ত হয়ে পরে। কথামতোই চাকরি শুরু করে। আমি তখনো পাশ করে বের হতে পারিনি। মোবাইল ফোন থাকায় তবুও যোগাযোগ থামেনি। ধীরে ধীরে ব্যস্ততা বাড়ল, যোগাযোগ কমতে থাকলো। তারপর আরও কম, উৎসবে, পার্বণে বা শুধু মন খারাপ হলেই একজন আরেকজনকে ফোন দেই। এরপর আমার প্রেম হল। এখন আর মন খারাপ হলেও মুগ্ধকে ফোন করি না। শুধু নিয়মিত পার্বণগুলোতে যোগাযোগ হয়।
যাই হোক, এমনই এক পার্বণ, ঈদের শপিং-এর মাঝে, আমি ফিয়ঁন্সে সমেত আরও কয়েক বন্ধু-বান্ধব জামায়েত হলাম। মুগ্ধও যথারীতি ছিল। সবাই ঠিক করল KFC-তে বসবে। আমি, আমার ফিয়ঁন্সে দুইজনই স্মোকার। তাই সিগারেট খেয়েই উঠলাম। আমাদের আড্ডা জমল বহুদিন পর। সবাই অনেক মিস করছিলাম ব্যাপারটা। এর মাঝে চলছে ঈদের দিনের সময় পার করার প্লান, দাওয়াত পর্ব। আমার পক্ষ থেকে এক দফা আফসোস, আমার বাসা নাই, নাহলে সবাই আমার বাসায় যেতে পারত আড্ডা দিতে। মুগ্ধ বলে উঠলো "আমার বাসায় আসিস"। পুরনো অভ্যাস, আমি ফোড়ন কাটলাম, "হ্যাঁ তোর বাসার ছাদে বিড়ি খেতে উঠছিলাম, খুব সুন্দর। তোর বাসায় গিয়ে, আমি আমার বউ নিয়ে ছাদে উঠে যাব আর বিড়ি খেতে খেতে রোমান্স করব, তোরা সব বাদ... " মুগ্ধর জবাব শুনে ওর সম্পর্কে আমার ভাবনাগুলো একটা বড় ধাক্কা খেল।
"আমি কোন মেয়েকে আমার বাসায় সিগারেট খাওয়া পারমিট করব না!!!"
আমার ধাক্কাটা আজো কাটেনি।

Comments

  1. অনেক দিন পর পুরনো তোকে পাওয়া গেল, তোর লেখায়ে তোর মননে, ভাল লাগলো পড়ে। আগের সৃতি গুল খুঁজে পেলাম অনেক অনেক দিন পর।

    "আমি কোন মেয়েকে আমার বাসায় সিগারেট খাওয়া পারমিট করব না!!!" কথাটা আমারই...

    একটু মনে হয় ব্যাখ্যা দেয়া দরকার... মেয়েরা আমার কাছে সবসময়ে আলাদা... মানুষ হিসেবে তারা আরও একটু বেশী সম্মান পাওয়ার যোগ্য কারণ তারা একি সাথে মা... সিগারেট খাওয়া টা আমি কখনওই পসন্দ করি না, ছেলে বা মেয়ে সে যাই হোক... একটা মেয়ে ঘুষ নিলে আমার যেমন খুব খারাপ লাগে একি কারনে একটা মেয়ের সিগারেট খাওয়া টা আমি মানতে পারি না... ছেলেদের কাছ থেকে অনেক কিছুই আমি আশা করি না... কিন্তু একটা মেয়ে র কাছে করি... মেয়েরা আমার কাছে অনেক সম্মানের তাই একি অপসন্দের কাজ একটা ছেলে করলে যতটা না কষ্ট লাগে তার চে কষ্ট লাগে একি কাজ একটা মেয়ে করলে...

    বন্ধু বেস্ততার দুরত্তের সাথে সাথে চিন্তার দুরত্ত টাও অনেক বেরে গেছে মনে হল তোর সাথে আমার... তাই হয়ত আমার কথাটা ভাল লাগেনি... তার পর অ এত ভাল লেখার জন্য ধন্যবাদ... এত ভালবাসার জন্য ধন্যবাদ যার যোগ্য হয়ত আমি নই...

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

দুঃসময় বা দুঃস্বপ্নের সময়...

কেন যেন মনে হচ্ছে দুঃস্বপ্ন দেখছি, আর প্রচন্ড অসহায় হয়ে চাচ্ছি, কেউ আমার ঘুমটা এক ঝটকায় ভেঙ্গে দিক। দুঃস্বপ্নের শুরু মায়ের অসুস্থতা দিয়ে। এখান ওখান করে শেষ পর্যন্ত কুর্মিটোলা হাসপাতালে পৌছালাম, ইমারজেন্সি-তে ওদের প্রশ্নের জবাব দিতে দিতেই মেইল এল, আম্মার COVID-19 পজিটিভ। সব ভয় ভুলে, চলে গেলাম রোগি ভরা ওয়ার্ডে, বেডে শুইয়ে দিলাম, ডায়ালাইসিস করে দিলাম। চলে আসার সময়, একবার মনে হল, এর পর আর দেখা হবে না। দু'দিন পর, ICU তে যায়গা পাওয়ায়, একটু নিশ্চিন্তে অফিসের একটা মিটিং এ জয়েন করলাম। মাঝামাঝি সময় ফোন এল, আম্মু সব চিকিৎসার বাইরে চলে গেছে, আম্মুকে নিয়ে আসতে হবে। সেদিন সেপ্টেম্বরের ৩০, ২০২০। ঈদের আর দুদিন বাকি। পরদিন বানানি কবরস্থানে মাটি চাপা দিলাম। সেই সময় প্রচন্ড বৃষ্টি, আগের দিন থেকেই স্বাভাবিকভাবেই চলছিলাম, কিন্তু কেন যেন এখন আর পারলাম না, সকল আত্মসংযমের বাধ ভেঙ্গে চুরে, বুকের ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে কান্না এল।  বৃষ্টির পানি, মুখের মাস্ক, পিপিই সব মিলে সেই চোখের পানি লুকিয়েই ছিল হয়তো, খেয়াল করা হয়নি। বা সেই অবস্থায় ও ছিলাম না।  এর পর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন, বাসার সবার। এর মাঝেই বাবার পাতলা পায়খা...

জেনারেশন গ্যাপ

জেনারেশন এ পরিবর্তন আসে অবশ্যম্ভাবী হয়ে। এর কোন ব্যতিক্রম নাই। কেউ চাক বা না চাক এই প্রক্রিয়া চলবেই। ভাল লাগুক বা মন্দ লাগুক কেউ সময় কে থামাতে পারবে না। এর মধ্যে বিতর্ক এসে যায় ভাল পরিবর্তন আর মূল্যবোধের নিম্নগামীতা নিয়ে। কিন্তু আমি সেসব নিয়েও কথা বলছি না। আমি বলছি কারণ যুগে যুগে সব মানুষের অপ্ত বাক্য ‘ দুনিয়াটা রসাতলে গেল ’। আমার দাদা আমার দাদী কে ভীষণ ভালোবাসতেন এবং তার মৃত্যুশোকে সন্ন্যাসী হন। তিনি তখন অবশ্য ছিলেন যুব-সমাজ রসাতলে যাবার অন্যতম উদাহরণ। এখন অবিশ্বাস্য লাগতেই পারে কিন্তু তখন কেউ তাকে ছেড়ে কথা বলেনি। আমার বাবা রবীন্দ্র সঙ্গীত এর ভীষণ ভক্ত ছিল কিন্তু তার সময় এটা ছিল সঙ্গীত এর নামে অশ্লীলতা। আব্বুকেও সিনেমা হলে সিনেমা দেখাতে যাবার জন্য অসংখ্যবার শুনতে হয়েছে যুব-সমাজ রসাতলে গেল। এসব সিনেমা কে এখন আমরা আর্ট পিস এর সম্মান দেই। এখন সবার গা-জ্বালা করা একটা সর্বনাম হল ডিজুস জেনারেশন বা আধুনিক ইয়ো পোলাপান। সবার মত অনুযায়ী তাদের কোন শেকড়ই নাই এবং এরা অন্ধভাবে পশ্চিমা সভ্যতা অনুকরণ ও অনুসরণ করে। কিন্তু সময় যখন সব বদলায় তখন সময় এর সাথে যুদ্ধ করা; আমি ঠিক কিন্...

Shortcut to Happiness...

Today, when I was getting out, one of my friend asked that once I told him, his relation with his wife will be cold. He is getting married within 3 months. Now he asks, why I said that. I was confused, when I told that, he was not that type of guy. Then, why? I told that, you have grown chariest. But, as it goes, everyone forgets the reason why they are in this race. I took the example of another friend. She doesn't like to work, she doesn't like job. But still she is doing it. That's not the problem. Problem is, she doesn't know why she is doing all these. It is killing her slowly. When I was in school, I was constantly persuaded by my parents to study hard so that I could stand First, Second or Third. Then I was forced to take Science in stead of Music on my Secondary school. Somehow, I got Star marks and it continued throughout my Higher Secondary. The pressure didn't fall, persuasion went on and on. Like I'm in the world not to live, to race. At univ...