Skip to main content

ছোট্ট বাবুদের ফটোগ্রাফির সহজ পাঠ - ৩

কি খবর বাবুরা? কেমন চলছে ফটোগ্রাফি প্রাকটিস? ফটোগ্রাফির সহজ পাঠের প্রথম পর্বে আমি কিছু বেসিক টার্ম বলেছিলাম।

১. সেনস্টিভিটি বা সেন্সরের ক্ষমতা (আই, এস, ও,)
২. শাটার স্পিড / এক্সপোজার
৩. ফোকাস
৪. শাটার সাইজ / এপার্চার

ফটোগ্রাফির সহজ পাঠের দ্বিতীয় পর্বে আমি ১,২ ও ৩ নিয়ে বলেছিলাম। বাকি থাকল, এপার্চার।

এপার্চার হল, শাটারের গায়ের ছিদ্রের মাপ, যেটা দিয়ে আলো ঢুকে। এটা মাপা হয় উল্টো নিয়মে। এখানে যত বড় নাম্বার ততো ছোট ছিদ্র। শাটার তৈরি হয় ডায়াফ্রাম দিয়ে। আরও ভালো করতে বলতে গেলে আইরিশ টাইপের ডায়াফ্রাম দিয়ে। যা হল ছোট ছোট প্যাঁচানো প্লেটের জোড়া।


নিচের ছবি দুইটা উইকি থেকে নিচ্ছি, প্রথমটা ডায়াফ্রামের ছবি, পরেরটা এটা কিভাবে কাজ করে তার এনিমেশন।






ছবি থেকে নিশ্চয়ই আইডিয়া পাচ্ছ কিভাবে ডায়াফ্রামের ফাকাটা বড়-ছোট হয়। কোন একটা মুহূর্তে যদি এই এনিমেশনটা স্টপ করে দেই, তবে আমরা একটা নির্দিষ্ট সাইজের ফাকা পাব। এই স্টপ করে দেয়া থেকেই এপার্চারের একক এসেছে এফ-স্টপ। আগেই যদি স্টপ করে দেই, তবে বড় ফাকা আর একটু পরে বন্ধ করতলে ছোট ফাকা। তাই, এর মাপটা উল্টো। নিচের ছবিতে ব্যাপারটা ক্লিয়ার হবে, 

এখন আসি, এটা দিয়ে কি হয় সেটা নিয়ে।

যেহেতু, ডায়াফ্রামের ফাকা জায়গা দিয়ে আলো ঢুকেই ছবি তৈরি হয়, তাই এপার্চার দিয়ে আসলে কতটা আলো ঢুকবে সেটা কন্ট্রোল করা যায়। এখন আসি এটা কি কাজে লাগবে।

ধরি, কোন একদিন তুমি বের হয়েছ ছবি তুলতে। প্রচণ্ড রোদ আর গরম... ঘামাতে ঘামাতে মনে হচ্ছে ব্রেন সহ গলে পানি হয়ে যাবে। সেই সময়, কোন একটা পুকুরের ধারে এক ঝলক বাতাস হল, আর পুকুরের পানিতে ছোট ছোট ঢেউ এর গায়ে এই কড়া রোদ রিফ্লেক্ট করে পুরো পুকুরটা আয়নার মত দেখাচ্ছে। এতটা সুন্দর ঘটনা নিজে দেখবে আর সবাইকে দেখাবে না তা কি হয়? প্রবলেম হল, বেশি আলো। তো আলো যেন কম সময় ধরে ঢুকে সেটার ব্যবস্থা তো তুমি এক্সপোজার দিয়ে করতে জান। কিন্তু, শাটার স্পিড খুব বেশি হলে আই,এস,ও, বাড়াতে হবে। আর আই,এস,ও, বাড়ালে নয়েজ বাড়বে। এই সময়ই দরকার এপার্চার কন্ট্রোল।

এছাড়া, আরেকটু এডভান্সড একটা বিষয় আছে, ডেপথ অফ ফিল্ড। এটার জন্যও এপার্চার কন্ট্রোল করা লাগে।

প্রশ্ন হল, ডেপথ অফ ফিল্ড কি? এটা আসলে একটা ধারণা। কতটা এলাকা জুড়ে ফোকাসটা থাকবে, সেটার মাপই হল ডেপথ অফ ফিল্ড। ছোটকালে ছবি আঁকতে? সবচে বেশি কোন ছবি আঁকতে? মোটামুটি কমন একটা ছবি হল, গ্রামের দৃশ্য। সবাই আঁকত। 

মোটামুটি একটা বিশাল এলাকা একটা মাত্র ডিমাই সাইজের / ফুলস্কেপ সাইজের কাগজে এঁটে ফেলতে হত। কখনো এমন ছবি তুলতে ইচ্ছা হয়েছে? না হলে ট্রাই করে দেখ। পুরো গ্রাম হয়তো পারবে না, ছবির মতন নদী, পাহাড়, বড় গাছ, মানুষ, দুরের তালগাছ, কাছের বাড়ী,.... এমন সব কিছু মিলিয়ে গ্রাম পাওয়াটা খুবই টাফ। তবে ছোটখাটো সুন্দর এলাকা তো পাওয়াই যায়। এই টাইপের ছবিকে বলে ল্যান্ডস্কেপ।  নিচের ছবিটা দেখ।

Landscape of Bangladesh

এখানে একটা বিষয় খুব ভালভাবে খেয়াল করে দেখ, সবচে’ কাছের ঘাস আর খুঁটি থেকে শুরু করে, একদম দুরের গাছ পর্যন্ত কোনকিছুই আউট অফ ফোকাস না। সবকিছুই পরিষ্কার, স্পষ্ট। কিছুই ঘোলা হয়ে যায় নাই। পরের ছবির ফ্লোর থেকে একদম দুর পর্যন্ত একই রকম।
smeatons pier to porth kidney


আবার নিচের ছবিটা দেখ,


এই ছবিটায়, ঘাস-ফড়িঙ  বাদে বাকি প্রায় সব কিছুই আউট অফ ফোকাস, ঝাপসা। 

উপরের ছবি দুটা বেশি (গভীর) ডেপথ অফ ফোকাসে তোলা, আর নিচের ছবিটা কম (অগভীর) ডেপথ অফ ফোকাসে তোলা।

কিন্তু, ডেপথ অফ ফোকাস কমায় বাড়ায় কিভাবে? এটা বেশ ভালো একটা প্রশ্ন... উত্তর হল, ফুল কন্ট্রোল আনার জন্য অনেক কিছু লাগে, তবে মোটামুটি ৬০%-৭০% কন্ট্রোল করা যায় এপার্চার দিয়ে।

বেশি এপার্চার মানে কম ডেপথ, কম এপার্চার মানে বেশি ডেপথ। অথবা, বড় নাম্বার মানে বেশি ডেপথ, ছোট নাম্বার মানে কম ডেপথ। যেমন, f/2.4 মানে কম ডেপথ, f/5.6 মানে বেশি ডেপথ।

ছোটখাটো জিনিস, যেমন পিঁপড়া, ফুল এসব জিনিসের ছবি তোলার সময় কম ডেপথে তুললে অনেক ভাল ইফেক্ট আসে। এই টাইপের ছোট জিনিসের ছবি তোলাকে বলে ম্যাক্রো ফটোগ্রাফি। 

আজকে আর বেশি প্যাঁচাচ্ছি না। তোমরা আপাতত এই ক’টা জিনিসের প্রাকটিস করতে থাক। সেপ্টেম্বরের ৩ তারিখের আগে আমি আর ফ্রি হইতে পারব না। আর ৩ তারিখের পরও  আমি এই বিষয়ে আরও পোস্ট দিব নাকি সেটা ডিপেন্ড করবে তোমাদের তোলা ছবি দেখে। ঘরের ভেতরই অনেক সাবজেক্ট আছে ছবি তোলার। যদি পার কি কি সেটিঙে (স্পিড, আই,এস,ও, এপার্চার) তুলেছ সেইটাও লিখে দিও। বাকিরাও শিখতে পারবে, প্রাকটিস করতে পারবে। চলুক তবে প্রাকটিস...

Popular posts from this blog

দুঃসময় বা দুঃস্বপ্নের সময়...

কেন যেন মনে হচ্ছে দুঃস্বপ্ন দেখছি, আর প্রচন্ড অসহায় হয়ে চাচ্ছি, কেউ আমার ঘুমটা এক ঝটকায় ভেঙ্গে দিক। দুঃস্বপ্নের শুরু মায়ের অসুস্থতা দিয়ে। এখান ওখান করে শেষ পর্যন্ত কুর্মিটোলা হাসপাতালে পৌছালাম, ইমারজেন্সি-তে ওদের প্রশ্নের জবাব দিতে দিতেই মেইল এল, আম্মার COVID-19 পজিটিভ। সব ভয় ভুলে, চলে গেলাম রোগি ভরা ওয়ার্ডে, বেডে শুইয়ে দিলাম, ডায়ালাইসিস করে দিলাম। চলে আসার সময়, একবার মনে হল, এর পর আর দেখা হবে না। দু'দিন পর, ICU তে যায়গা পাওয়ায়, একটু নিশ্চিন্তে অফিসের একটা মিটিং এ জয়েন করলাম। মাঝামাঝি সময় ফোন এল, আম্মু সব চিকিৎসার বাইরে চলে গেছে, আম্মুকে নিয়ে আসতে হবে। সেদিন সেপ্টেম্বরের ৩০, ২০২০। ঈদের আর দুদিন বাকি। পরদিন বানানি কবরস্থানে মাটি চাপা দিলাম। সেই সময় প্রচন্ড বৃষ্টি, আগের দিন থেকেই স্বাভাবিকভাবেই চলছিলাম, কিন্তু কেন যেন এখন আর পারলাম না, সকল আত্মসংযমের বাধ ভেঙ্গে চুরে, বুকের ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে কান্না এল।  বৃষ্টির পানি, মুখের মাস্ক, পিপিই সব মিলে সেই চোখের পানি লুকিয়েই ছিল হয়তো, খেয়াল করা হয়নি। বা সেই অবস্থায় ও ছিলাম না।  এর পর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন, বাসার সবার। এর মাঝেই বাবার পাতলা পায়খা...

জেনারেশন গ্যাপ

জেনারেশন এ পরিবর্তন আসে অবশ্যম্ভাবী হয়ে। এর কোন ব্যতিক্রম নাই। কেউ চাক বা না চাক এই প্রক্রিয়া চলবেই। ভাল লাগুক বা মন্দ লাগুক কেউ সময় কে থামাতে পারবে না। এর মধ্যে বিতর্ক এসে যায় ভাল পরিবর্তন আর মূল্যবোধের নিম্নগামীতা নিয়ে। কিন্তু আমি সেসব নিয়েও কথা বলছি না। আমি বলছি কারণ যুগে যুগে সব মানুষের অপ্ত বাক্য ‘ দুনিয়াটা রসাতলে গেল ’। আমার দাদা আমার দাদী কে ভীষণ ভালোবাসতেন এবং তার মৃত্যুশোকে সন্ন্যাসী হন। তিনি তখন অবশ্য ছিলেন যুব-সমাজ রসাতলে যাবার অন্যতম উদাহরণ। এখন অবিশ্বাস্য লাগতেই পারে কিন্তু তখন কেউ তাকে ছেড়ে কথা বলেনি। আমার বাবা রবীন্দ্র সঙ্গীত এর ভীষণ ভক্ত ছিল কিন্তু তার সময় এটা ছিল সঙ্গীত এর নামে অশ্লীলতা। আব্বুকেও সিনেমা হলে সিনেমা দেখাতে যাবার জন্য অসংখ্যবার শুনতে হয়েছে যুব-সমাজ রসাতলে গেল। এসব সিনেমা কে এখন আমরা আর্ট পিস এর সম্মান দেই। এখন সবার গা-জ্বালা করা একটা সর্বনাম হল ডিজুস জেনারেশন বা আধুনিক ইয়ো পোলাপান। সবার মত অনুযায়ী তাদের কোন শেকড়ই নাই এবং এরা অন্ধভাবে পশ্চিমা সভ্যতা অনুকরণ ও অনুসরণ করে। কিন্তু সময় যখন সব বদলায় তখন সময় এর সাথে যুদ্ধ করা; আমি ঠিক কিন্...

Personal notes on my Transition form Windows to Linux - Part 1 : Prolouge

Deciding to move to Open-source/Free software and Linux for everyday task is not a small decision. Especially when living in Bangladesh where almost 80% of the people still uses ASCII font based system for typing Bangla language, paying for software is a very remote idea which happens to only to the “Other people”.