Wednesday, May 28, 2014

কেন বলি ভালোবাসি বারে বার

ভালোবাসার অনুভূতিটা,
উপচে পরার মতই...

অনেক বেশি...

চিৎকার করে বারংবার
নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে চায়...

দেখিস,
তোর মনেও চিৎকার করে।
হয়তো,
তুই সেটা,
মুখে ফোটাস না।

তোর মন,
তোর প্রাণ,
তোর সমগ্র অস্তিত্ব,
চিৎকার করে জানান দিতে চায়
ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি...

সবাই তো তোর মত নয়,
কাউকে কাউকে
এই চিৎকার
গ্রাস করে নেয়।

দম বন্ধ করা সেই অনুভূতি
তখন,
চিৎকার করে নিজের অস্তিত্ব জানায়।
চোখে,
মুখে,
কানে,
সবখানে।

আর তখন,
কিছু কিছু মানুষও,
বেচে থাকার প্রবল বাসনায়...
মৃত্যুর কাছাকাছি সেই
অনুভূতির গ্রাস থেকে মুক্তি পেতে
বারংবার চিৎকার করে বলে উঠে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি...

আমিও,
সেই সাধারণেরই একজন।

ভালোবাসার অনুভূতিটা,
গ্রাস করার মতই...
ভালোবাসার অনুভূতিটা,
ডুবিয়ে ফেলার মতই...

Monday, May 26, 2014

স্বর্ণপ্রহর

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে যাওয়া। গোসলের আগে দ্রুত শেভ করে চুলটাও সেই ফাঁকে একটু গুছিয়ে নেয়া। একেবারে পরিপাটি হয়ে নাস্তার উদ্দেশ্যে ভ্রমণ শুরু। 

সকালের তপ্ত রোদে অপেক্ষা সহসাই শীতল হওয়া আকাশী রঙের দেখা পেয়ে। এরপরে খুনসুটি চলতে থাকে রোদ-ছায়া আর মেঘলা-হওয়ায়। ভাগ্য বলে সত্যিই কিছু আছে নাকি স্রেফ ভ্রম, এটা ভেবে শেষ করার আগেই, ভাগ্যদেবী আবারও চমকে দেন, না পাওয়াটা পাইয়ে দিয়ে। চিনি মাখা রুটির তালগোলে কেটে যায় আরও কিছুটা সময়।

তিন চাকার ঘূর্ণনে পৌঁছে যাওয়া আরও এক দফা অপেক্ষার সামনে। পোড়া-মুখে আফসোস হয়, চোখে চোখে মেপে নেয়া দৃষ্টির যুদ্ধ চলে, আর, হাতির রোগা-পটকা সাথীর সাথে চলতে থাকে অনুযোগ। এভাবেই লেইস-ফিতা আর জলে ভাসা সাবান ছাড়িয়ে নিয়ে যায় বিদায়ের লগ্ন। 

খোলা হাওয়ায় দীঘল চুলের পাল উড়িয়ে ভেসে চলা এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত। সিক্ত হবার ভয়ে সাবধানী হাতে ভাঙ্গে কাচের টুকরো। দুমড়ানো পলিথিনে, ভালো লাগা মুহূর্তগুলোকে আরও একটু দীর্ঘায়ু করার আকুতি জানান দেয়।

পাগলামি, চুরি করে গায়ে মাখা, বৃষ্টির আদর। পাশাপাশি, তিন চাকা কেবল ঘুরতেই থাকে। সেই সাথে অবাক চোখে বৃষ্টির খেলা দেখা, দেখা আকাশী হাসি। ভেজা বর্ষায় ভেজা হাত ছুঁয়ে দেবার প্রবল বাসনা চাপা পরতে থাকে সংকোচের আড়ালে। চরকির পাক থামলে, খুনসুটি চলে মুগ্ধ দৃষ্টিতে বিরক্তি নিয়ে। এক ফাঁকে, দুরের আলাপনে প্রিয় মানুষ দেখা, দেখানোর ষড়যন্ত্র ধূলিসাৎ হলেও ভাটা পরে না উপভোগ্যের আগমনীতে। সেই সাথে হাটাহাটি পাশাপাশি। বোঝার ভার হাল্কা হতেই দে ছুট, দে ছুট... 

বেগুনী পাপড়ির ছোঁয়া নেয় নরম হাত আর ঠোট ছুঁয়ে দেয়া ধোয়া উঠা চা। সহস্র ছবি তুলে নেয়া মনের ক্যামেরায়, হাজার ভঙ্গি আর হাজার কোন থেকে। কল্পনাতে এভাবেই পার হোক হাজার বছর। তবু, চঞ্চলতার চপলতায় সেই ক্ষণেও নাড়া লাগে। ভিজে যাওয়া নীলচে শীতলতা কাটে অব-লাল পরশে।

দুর হতে জলাধারে জলের খেলা দেখা বিষণ্ণ আকাশী মুহূর্তটাকে মনে হতে থাকে সোনালী সময়। ফিরে পেতে এমন ক্ষণ হাজার বার বুক বাধে মন আবারো আশায়। জীবনের প্রতিটা মুহূর্তই বাধিয়ে রাখা যায় এই উপলব্ধিটাই বড় হয়ে উঠে। এমন দিনে মনে হতে থকে, জীবন আসলেই সুন্দর। এরপরে ধোয়া ওঠা বকুলের ঘ্রাণ, মাতাল পাগল করা। ফিরে যাবার কথাটাতেও কষ্টের ছাপ থাকে না আর। বরং, নিশ্চিত ভাঙ্গনের আশংকা কেটে যায়, অচেনা মুহূর্তগুলোকে ফ্রেমে বেধে ফেলে। সুখ নিয়ে কাঁধে নেয়া আবার বোঝা, ফেরার সময় হল। বুকের কাটাটাও ফিরিয়ে দিতে হয়, আনমনে রয়ে যায় ইস্পাতের পাতখানি, অগোচরেই। 

চাকা আবারও ঘুরতে থাকে। বিদায় বলাটাও সুন্দর হতে পারে, সেই সম্ভাবনা বুকেই লুকিয়ে থাকে। বিকেল গড়িয়ে যায়। এরচেয়ে বেশি হলে, উপচে পরতেই পারে। তবু আবারও এমন দিন আসবেই, আসবে। আশা আছে, আছে বিশ্বাস, পুরোটাই। তাই, বিদায় বলাটাও সুন্দর হতে পারে। ফিরে যাওয়া একই পথে। বিকেলের শেষ। 
আনমনে গেয়ে ওঠা গানটাকে কেন যেন খুবই পরিচিত মনে হতে থাকে। এ তো আমারই কথা!!! ভর সন্ধ্যায়, একলা ফেরার পথে, অসম্ভব সুন্দর কিছু মুহূর্তের শেষে রেশ ধরে রাখে, মনের কোনে বাজতে থাকা গানটা - 

"...আমার সারাটা দিন,
মেঘলা আকাশ,
বৃষ্টি,
তোমাকে দিলাম।
শুধু শ্রাবণ সন্ধ্যাটুকু
তোমার কাছে, চেয়ে নিলাম।..."

Sunday, May 18, 2014

পুজারী

পাড়ি দিতে পারি,
পৃথিবীর ওই প্রান্তে,
যদি সেটা হয়,
আপনার উদ্দেশ্যে।

হেটে ছুতে পারি,
সরে যাওয়া দিগন্ত।
যদি সেটা হয়
আপনার পাশাপাশি।

তবে দেবী,

যদি ছোঁয়া যেত
তব হাতে, এই হাত...
তবে বলতেম,
মরিতেও নাহি খেদ...

কেউ পূজা দেয়,
ভক্তির স্রোত থেকে,
কেউ পূজা দেয়,
ধর্মের শৃঙ্খলে...

আমার পূজা,
হৃদয় গভীর হতে,
অঞ্জলি দেই,
প্রেমের কাব্য ঢেলে...

Saturday, May 17, 2014

নয় নম্বর বিকল কপোট্রন থেকে...

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে, সবাই জানুক...
বুকের ভেতর আমার এত সুখ।
কেমন করে করছি উপভোগ, ভাবনাগুলো।

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে, সবাই জানুক...
কোন কথাটা বুকের ভেতর তুলছে আলোড়ন।
কেমন করে, বলছি সেটা।

ঠিক তখনই কবিতা হয়,
তোকে বলা কথা গুলোই...
ঠিক তখনই গান হয়ে যায়
তোকে ঘিরে অনুভূতির দল...

কলম খাতায় সখ্য বাড়ে,
সখ্য বাড়ায় ছন্দ ও সুর
ভাবনাগুলো গুছিয়ে যায়, আপনা থেকেই।

তোকে ঘিরে আবর্তনে,
যন্ত্র থেকে বিবর্তিত
আবেগ সহ পূর্ণ মানুষ।

কথার ঝুড়ি ফুটতে থাকে,
ভাসতে থাকে গানের সুরে
মানুষ থেকে মহা-মানুষ, প্রেমের ছোঁয়ায়।

অন্য সময়, অন্য খানে,
হারায় আবেগ,
যান্ত্রিকতায়।
নয় নম্বর, যন্ত্র-পুরুষ...

সমীকরণ মাথায় আছে,
হিসেব আছে,
নিয়ম-কানুন সবই আছে,
ইচ্ছেও আছে।

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে, নিয়ম ভাঙ্গুক...
মানুষ হয়ে যাই পেয়ে তোর,
নরম আদর।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে, সবাই জানুক...
চলছে কি এই বুকের ভেতর।

Friday, May 16, 2014

হিমেল হাওয়ার গল্প


নরম সীটে গা এলিয়ে
জানলা দিয়ে,
রোদ্দুর দেখ।

দেখতে পাবি,
একটা ছেলে,
একলা চলে,
রিকশা সীটে, আলতো হাসি,
মুঠোয় ভরা আলাপনে মগ্ন থেকে,
শরীর মাখে,
রোদ্দুর আর গরম হাওয়ায়।

নাও বা যদি দেখতেও পাস,
এই শহরের কোন পথেই,
রয়েছে সে,
জেনে রাখিস।

সুচ আর সুতোয়, দিচ্ছে জোড়া,
টুকরো সময়,
নকশী কথায়,
তৈরি করা পদাবলী।

জেনে রাখিস কারণ ছাড়া
ফুল ফোটে না,
নামে না যে,
বর্ষা কভু, অঝোর ধারায়।

খুজিস না তা ও,
কোন কারণে,
তপ্ত দুপুর, হয় যে মধুর...
কোন কারণে,
গরম হাওয়াও শীতল লাগে...
কারণটুকু, থাক আড়ালেই,
সেই ছেলেটার।

Sunday, May 04, 2014

এর চেয়ে বেশি কিছু চাই না

ক্ষণিকের আলাপন
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়,
সেই সাথে বাড়তে থাকে
চেপে রাখা দীর্ঘশ্বাস।

যেটুকুই পেয়েছি,
লাভের খাতায় জমা হতে থাক।
এর চেয়ে
বেশি কিছু চাই না।

সুখের আড়ালে
হতাশারা জমা হতে থাক।
স্মৃতির কোঠায় জমে
খুচরো সময় সব।

হারানোর ভয় আমার
অনেক অনেক বেশি।
আশার হিসেব সব
ওলট-পালট।

আড়ালের ভালোবাসা
ভারী দীর্ঘশ্বাস হয়ে বুকেই জমে থাক।
এর চেয়ে
বেশি কিছু চাই না।

Saturday, May 03, 2014

পরিবর্তন

জীবনের মোড়ে এক,
আশ্চর্য পরিবর্তন
ছক বাধা পথ চলায়,
হঠাৎ এক ছন্দপতন।।

হঠাৎ করেই সব
এলোমেলো হয়ে গেল
হঠাৎ করেই সব
সাদা-কালো রঙে রঙিন হল।।

ভাষাহীন জীবনে আজ,
লেগেছে, সুরের ছোঁয়া
জীবনের কষ্ট গুলো আজ
হচ্ছে সাফ, যেন বৃষ্টি ধোয়া।।

মনের কোন কোনে
আশার আলো, পথ যে দেখায়
নতুন জীবন গড়ে
আমায় সে যে বাচতে শেখায়।।

হঠাৎ করেই দেখি
জীবন আমার বদলে গেছে
আধার কোন হতে সে
যে আলোর দেশে পৌঁছে গেছে

বুঝতে পেরেছি আমার হয়েছে যে কি...
বুঝতে পেরেছি, ভালোবাসতে শিখেছি...



- পল্লব,
১২ই শ্রাবণ, ১৪০৭।
27th July, 1999.