Thursday, September 27, 2012

বিপ্লব

১। অতঃপর তাহারা কহিল, এই কার্য আমাদের নহে।
২। কসম মানবজন্মের, যা তোমাদের করেছে সৃষ্টির সেরা এবং দিয়েছে বিবেচনা শক্তি।
৩। আপনি কি জানেন না ভারতবর্ষের ইতিহাস?
৪। সাধারণ মানুষ ছিল রাজনীতি হতে দূরে এবং যুদ্ধ হতো শুধুই রাজ-সেনাদলের মধ্যে।
৫। বিনিময়ে তারা পেয়েছিল নীলচাষের মতন অভিশাপ।
৬। এবং কেউ কেউ বলে ওদের আন্দোলনে আমাদের অংশগ্রহণ নাই।
৭। আভ্যন্তরীণ কোন্দল ভারত-জাতীকে করেছিল দুর্বল বহিঃশত্রুর মোকাবেলায়; এবং এনেছিলো ব্রিটিশ শাসন।
৮। আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন ভারত-বিভাগ সম্পর্কে, যা ছিল শাসকদের সিদ্ধান্ত এবং সাধারণ মানুষকে বাধ্য করেছিল জন্মস্থান ছেড়ে যেতে।
৯। নিশ্চয়ই ব্যক্তিগত শত্রুতা জাতিগত-ভাবে ক্ষতিকর।
১০। হে বান্দাসকল, কসম তোমাদের; তোমাদের সামনে রয়েছে এক কঠিন পরীক্ষা।
১১। তোমাদের যাদের রয়েছে বিবেচনা (এবং জ্ঞান) তারা অবশ্যই ভুলে যাবে ব্যক্তিগত মতানৈক্য এবং করবে আরও শক্তিশালী, আন্দোলনকে।
১২। নিশ্চয়ই তোমার জানা আছে প্রতিটি পদক্ষেপ, ঘরের শত্রুর।
১৩। এবং যাকে পরাস্ত করার সুযোগ পাবে তুমি ভবিষ্যতেও, যদি পাও বিজয় বহিঃশত্রুর আক্রমণের বিরুদ্ধে।
১৪। হে বান্দাসকল, কসম মানবজাতির ইতিহাসের, ক্ষমতা সর্বদাই মানুষকে করে অন্ধ এবং তাকে করে অবিবেচক।
১৫। তুমি কি জান জর্জ অরওয়েল-এর নাম? যিনি বলে গেছেন রাশান জাতির গল্প এবং বলেছেন কিভাবে বিপ্লবের নেতারা একে একে নিমজ্জিত হয়েছিল ক্ষমতার মোহে।
১৬। তুমি কি অস্বীকার কর তাদের অন্ধত্বের কথা!
১৭। নিশ্চয়ই জানবে ক্ষমতার মোহ থেকে মুক্ত নয় সবচেয়ে সেরা তত্ত্বের অনুসারী-গনও। (কারণ তাদেরও রয়েছে মানবীয় ত্রুটিসমুহ)
১৮। হে বান্দাসকল, বিবর্তন তোমাকে দিয়েছে বিবেচনা আর তোমাকে দিয়েছে জ্ঞান ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেবার।
১৯। সুতরাং কিরূপে তাহারা দাবি করে এই কার্য তাহাদের নয়, যখন তাহারাও এই মানবজাতিরই অন্তর্গত।
২০। ক্ষমতার মোহে পথভ্রষ্ট নেতা-গনের কাছে কিরূপে তাহারা সমর্পণ করে দায়িত্বের!
২১। তবে তারা কি এতই অবিবেচক যে দাবি করে সকল দায়িত্ব সরকারের, তাদের নয়!
২২। এবং এভাবেই তারা পাশ কাটিয়ে যায়।
২৩। এবং তারা জানে না তারা এভাবেই ডেকে আনছে ধংস, নিজেদেরই।
২৪। হে বান্দাসকল তোমাদের আছে সুবিবেচনা এবং তোমাদের আছে আলোর পথের সন্ধান।
২৫। অতএব: স্বীয় কার্য তোমরা এড়াইয়া চলিও না।
২৬। এখনই নাও পদক্ষেপ, চালাইয়া যাও যুদ্ধ। (আন্দোলন)
২৭। নিশ্চয়ই জানবে তোমাদের জন্য আছে পুরষ্কার, একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ।

আমার দুনিয়া দর্শন ....

সবাই একই রকম স্মার্ট হয়ে দুনিয়াতে আসতে পারে না। আফসোস আমি নিম্ন মানের আই-কিউ নিয়া দুনিয়াতে আসছি, তাই সেই ছোটবেলা থেকে ভুগছি।এই দুনিয়ার হালচাল আমি বেশীর ভাগ ই বুঝি না, আর বুঝলেও যেগুলা কঠিন মনে হয় সেগুলা মনে রাখতে পারি না।

প্রথমেই ছোটবেলার কথা ধরা যাক, আমি যে একটা মেয়ে সেটা আমাকে বার বার মনে করায় দেয়া আর বাচ্চা মেয়েদের কার্যকলাপ বার বার শিখানো সত্ত্বেও আমি সেটা মোটেও মনে রাখতে পারতাম না । শেষ পর্যন্ত সবাই হাল ছেরে দিলো....
একটু বড় হয়ে আমি পড়াশুনার দুনিয়ায় বেশী সুবিধা করতে পারলাম না। কখনো খুব ভালো ত কখনো খুব খারাপ, খুব মনোযোগ দিয়া মুখস্থ করতে পারতাম না....
কলেজে প্রেম করা হয়নি প্রেম বুঝি না বলে....

আর এখন ত দুনিয়ার বেশির ভাগ জিনিস ই বুঝি না....

আমি যে কত মানুষকে ডিসাপয়েন্টেড করেছি সেটা ভাবলে নিজের-ই ভয় লাগে। কিন্তু এই সহজ সত্যটা কেউ বুঝে না যে এইটা ইচ্ছাকৃত না.... বরং আমার নিম্ন আই কিউ লেভেল এর জন্য।আর বুঝলেও মানুষ মোটেও মানতে চায়না যে দুনিয়াতে লো আই-কিউ নিয়াও কেউ পয়দা হইতে পারে ।
তো যেই কথা বলতেছিলাম  , কথা হচ্ছে আমার দুনিয়া দেখা নিয়ে আর আজকে আমি মুডে আছি আমার নারী  দর্শন নিয়া কিছু নিম্ন আই-কিউ এর কথা বলতে। কারণ আজকেই কই জানি দেখলাম কে জানি মেয়েদের কাপর চোপরের মাপ নিয়া তাদের চরিত্র মাপতেছে ....lol.... এরচে হাস্যকর আরেক জায়গায় দেখেছি, গর্ভপাত করার সময় নাকি জরায়ুতে একটা বড় কাচি ঢুকায় কেটে কেটে বাচ্চা বের করে। বিচিত্র এই দুনিয়া, বিচিত্র আমার ফেবুর হোম পেজ- এইখানে ধর্মানুভুতিতে আঘাত পাওয়া আহত নিহত ব্যক্তির চিৎকার আছে , বাক-স্বাধীনতার জোরালো দাবী আছে, কবি আর প্রেমিক আছে, দুষ্ট বালক-বালিকারা আছে , ইয়ো-রা আছে , আতেল আছে , অবিশ্বাসী কাফের-রা আছে আর তারচেয়েও বেশী আমার ভালো বন্ধুরা আছে।

এখন বাংলাদেশের মেয়দেরকে দেখা বলতে, আমার স্কুল-সিটি রাজশাহী, নানার বাড়ি, হোস্টেল আর ঢাকার সব জায়গার মেয়দেরকে দেখা বুঝায়; এর বাইরে বিশাল বাংলা অনাবিষ্কৃত। তো কি দেখলাম আমি আমার ছোট্ট বাউন্ডারি তে (আমিও এই এরিয়া এর একজন) - আসলে মেয়েরা চাইলেই তাদের পছন্দের কাছা কাছি একটা জীবন কাটাতে পারছে কিন্তু পুরাপুরি না। তারা ইচ্ছা করলেই সামনে বিশাল পানি দেখলে মোজা-জুতা পরে ঝাঁপিয়ে পরতে পারে না, কিন্তু ইচ্ছা মত বৃষ্টিতে ভিজতে পারে । আসলে উদাহরণ দিয়ে লাভ নাই খুব সূক্ষ্ম কিছু ব্যাপার স্যাপার। কিন্তু কথা হল এই সূক্ষ্ম মাপজোখ-এ আমি তখনই বসব যখন সবকিছু একই লেভেলে থাকবে কিন্তু আমার মনে হয় না একই লেভেলে আছে....

প্রতিদিন রেপ , এসিড নিক্ষেপ , যৌতুক এর দাবীতে অত্যাচার আর খুন, পাচার আর বিক্রি একটা রেগুলার ঘটনা এবং শহরে আধুনিক কোন মেয়ে বা আপনাদের ভাষায় উশৃংখল মেয়েরা ইভ-টিজিং এর শিকার হওয়াটা বরং অনেক রেয়ার। তাহলে খামোখাই মানুষের ব্যক্তিগত পোশাক-আশাক, তার নিজের মত করে একটু জীবন কাটানো দেখে আপনাদের গালাগালির কারণ কি?? বরং যেসব এলাকায় এইধরনের ক্রাইমের প্রাদুর্ভাব বেশী সেখানকার মেয়েরা শালীন পোশাক-ই পরে আর বিনা প্রয়োজনে বাইরেও যায়না....তবু তারা রক্ষা পায় না....

আমার নিম্ন আই কিউ এ মনে হয় কারণটা আপনাদের অবদমিত কামনা বাসনা আর না পাওয়ার ক্ষোভ ....তাই কি??

এখানে নারীবাদ এর প্রয়োজন নাই বরং সবাইকে মানুষ হিসাবে না ভাবতে পারার ব্যর্থতা আছে। পুরুষ-বাদ মেয়েদেরকে চিপা দিয়ে নিচে নামাইতে চায় আর নারীবাদ নারীকে ঠেলে উপরে তুলতে চায়। কিন্তু মানুষ হিসাবে পাশাপাশি কি তারা কখনো দাঁড়িয়েছে!!!! আমি জানি না ; অবশ্য আমি দুনিয়ার বেশীরভাগ জিনিস ই জানি না....

ভেবে দেখলাম আমি যেমন অনেককে হতাশ করেছি, আমি নিজেও কম ডিসাপয়েন্টেড হই নাই....

পৃথিবীর এই কর্নারে ছোট্ট একটা দেশ আছে বাংলাদেশ যেখানে সবকিছু অনেক অন্যরকম , জীবন কঠিন কিন্তু মাঝে মাঝে ভীষণ সুন্দর। কেউ কি আমার মত লো আই কিউ নিয়ে আমার দেশকে দেখে!!!! জানতে ইচ্ছে করে....

Wednesday, September 26, 2012

২৫/০৩/০৮_৫

কাঠ ফাটা রদ্দুর
হাঁটি আমি যদ্দূর,
পদ ধুলি রেখে পথে
যাব আর কদ্দূর!!

Monday, September 24, 2012

একখানা অর্বাচীন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার...

আমার একটা নতুন রোগের উপসর্গ দেখা দিয়াছে। ইহা নাকি খাদ্য গ্রহণে অনিয়ম করার ফসল। ইহার ফলে, ২/৩ দিন পরপর পশ্চাৎদ্বেশের বহিরা-ভরন ছিঁড়িয়া যাইবার উপক্রম হয়। বিশ্বস্ত সূত্রে জানিতে পারিলাম, আরও অনেকেরই এই ব্যাধি রহিয়াছে, কিন্তু চক্ষুলজ্জার ভয়ে তাহা তারা প্রকাশ করিতে চাহেন না। এই সমস্যার সমাধানে তাহারা একটা ক্ষতিকর বস্তুর শরণাপন্ন হন, যাহাকে প্রকারান্তরে অনেকে সিগারেট/বিড়ির মাধ্যমে গ্রহণ করেন। উহা হইল নিকোটিন। এই নিকোটিন নামক বস্তুর সহিত যদি গরম দুগ্ধ মিশ্রিত চা বৃক্ষ-পত্রের নির্যাস গ্রহণ করা হয়, তবে নাকি ইহা আরও কার্যকর ভূমিকা রাখে। কিন্তু, নিকোটিন নামক এই ক্ষতিকর বস্তুটিতে অভ্যস্ত হইয়া গেলে, অন্য এক প্রকার যন্ত্রণার সম্মুখীন হইবার আশংকা থাকে, তাহা হইল, যখনই এই বস্তু গ্রহণ করা হয়, তখনই আপনার জৈবিক বর্জ্য আপনার শরীর হইতে নিষ্ক্রান্ত হইবার প্রয়াসে আপনার পশ্চাৎ নির্গমন পথে আসিয়া চাপ প্রয়োগ করিতে থাকে।


আমি তাই একখানা বিকল্প সমাধান খুঁজিয়া পাইতে উদ্যোগী হই। এবং যথেষ্ট গবেষণা পূর্বক একখানা ফর্মুলা আবিষ্কার করিতে সক্ষম হইয়াছি। ইহা এখন পর্যন্ত কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় নাই।


ফর্মুলাখানা রতের খাদ্যগ্রহণের সময় ঘি সহযোগে গ্রহণ করিতে হয়। আপনি কি ঘন ডাউল নামক খাদ্যবস্তুটির সহিত পরিচিত? ইহা গরম ভাতের সহিত অতি উপদেশ খাদ্য বলিয়া প্রতীয়মান। ইহা রাঁধিবার পূর্বে কিছু পরিমাণ অতিরিক্ত প্রস্তুতি লইলেই আপনার চলিবে। পুই-এর শাক বলিয়া এক প্রকার সবজি আছে, তাহা প্রয়োজন অর্ধ কিলোগ্রাম পরিমাণ, ঢেঁড়স বা ভেন্ডী নামক সবজি প্রয়োজন আরও অর্ধ কিলোগ্রাম পরিমাণ। এই পুই-এর শাক আনিয়া, যথেষ্ট পানি সহযোগে উত্তমরূপে ধুইয়া নিন। এর পর এর পত্রগুলি ডাল হইতে ছিঁড়িয়া একটি পাত্রে জমা করিতে থাকুন। পুই-পত্রের আকার যদি অতিরিক্ত বড় হয়, তবে তাহাকে হস্ত প্রয়োগের মাধ্যমে দুই টুকরা করিয়া ছিঁড়িয়া ফেলা উত্তম। সমস্ত ডাল যখন পত্র-পল্লব বিচ্যুত হইয়া যাইবে, ডাল গুলোকে তখন, ২.৫ হইতে ৩ ইঞ্চি লম্বা লম্বা টুকরায় কাটিয়া পাত্রে জমা করুন। ইহার পর, ২/৩ জন ব্যক্তির উপযুক্ত পরিমাণ ঘন ডাল, রান্নার নিমিত্তে মশলা সহযোগে, চুলার উপর চড়াইয়া দিন। কিন্তু লবণ দিন স্বাভাবিকের দেড়/পৌনে দুই গুন, এবং পুই গুল্মলতার যেই ডালগুলি আপনি পূর্বেই আলাদা করিয়া রাখিয়াছিলেন, তাহাও এই ডালের সহিত যোগ করিয়া দিন। এবং রাঁধিতে থাকুন। রান্না প্রায় হইয়া আসিলে তাহাতে পুই-পত্র যোগ করুন এবং একটু নাড়িয়া অল্প আচে ঢাকুনি দিয়া রাখুন। কিছুক্ষণ পর পর নাড়িয়া দিতে থকুন যতক্ষণ না পুই-পত্র সম্পূর্ণ রূপে সিদ্ধ হইয়া গলিয়া যাইবার উপক্রম হয়।


এইদিকে যে ভেন্ডী আপনি আনিয়াছিলেন, তাহা কি হইবে? এই ভেন্ডী গুলাকেও উত্তমরূপে ধুইয়া লন এবং অর্ধ সেন্টিমিটার পুরু কুচিকুচি করিয়া কাটিয়া ফেলুন। তাহাতে খুবই স্বল্প পরিমাণ হলুদ দিয়া ভাজিয়া ফেলুন, যেন তাহার রং সবুজ থাকে। এর পর ভাত চড়াইয়া দিন। ভাত রাধা শেষ হইয়া গেলে বাসন লইয়া খাদ্য-গ্রহণের, প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।


ধোয়া উঠা গরম ভাত বাসনে লইয়া তাহাতে ঘি যোগ করুন এবং কিছুটা লবণ বা নুন যোগ করুন। এবং দ্রুত মাখিয়া ফেলিয়া দুই এক নলা পরিমাণ খাইয়া ফেলুন। লক্ষ্য করুন, যে ঘি মিশ্রিত এই ভাতের স্বাদে কেমন আমোদ লাভ করা যায়। ইহার করনেই সম্ভবত শাস্ত্রে ঋণ করিয়া ঘি খাইবার কথা বলা হইয়াছে। তাহার পর ঘি-মিশ্রিত ভাতে প্রচুর পরিমাণে পুই-এর ডাল এবং ভেন্ডী যোগে একসাথে মাখাইয়া খাদ্য গ্রহণ করুন। উল্লেখ্য, ফর্মুলার কার্যকারিতা পাইতে, আপনার প্রতিদিনের ভাত গ্রহণে চাইতে সোয়া এক গুন বেশি খাদ্য গ্রহণ করা আবশ্যক।


ইহার পর একখানা ঘুম দিন। প্রত্যুষে উঠিয়া আপনার প্রাতঃকৃত্য সরিতে যান। দেখিবেন, আপনার পশ্চাৎদ্বেশের বহিরা-ভরন ছিঁড়িয়া যাইবার উপক্রম আর হইতেছে না, বরং একখানা মোলায়েম অনুভূতির সহিত আপনার জৈবিক বর্জ্য আপনার শরীর হইতে নিষ্ক্রান্ত হইতেছে।

ইহাই হইল আমার ফর্মুলা। আমি এই যুগান্তকারী ফর্মুলা আবিষ্কারের উপর একখানা বৈজ্ঞানিক জার্নাল প্রকাশের পঁয়তারা করিতেছিলাম, কিন্তু আমার কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী কইলেন, আমি যেন ইহা মুখচ্ছবি নামক একখানা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণার্থে উন্মুক্ত করিয়া দেই। ইহা ছাড়া তাহারা আরও কহিলেন, যেন, ইহা লইয়া একখানা প্রবন্ধ, ব্লগ নামক আন্তর্জাতিক দিন-পঞ্জিকায় প্রকাশ করিতে সচেষ্ট থাকি। তাহা হইলে জনকল্যাণ মূলক অবদানের কারণে আমার বিদেশ যাইবার পথ সুগম হইয়া যাইবে। এমনকি, আমি নাকি জনকল্যাণ মূলক অবদানের করনে শান্তিতে নোবেল পদকও পাইয়া যাইতে পারি, প্রধানমন্ত্রীর এই পদক লাভের পরপরই। আপাতত নোবেল কমিটি তাহার দালালের আবেদনটি বিবেচনাতে ব্যস্ত আছেন। তবে, আমার বিদেশ যাইবার গোপন বাসনাকে সফল করিতে আপনারা পছন্দ ও মন্তব্য করিয়া সহযোগিতা করিতে পারেন। কারণ শুনিয়াছি, কোন এক মর্কট নাকি আমাকে নিজ বিদেশ গমনের চেষ্টায় হুমকি স্বরূপ মনে করিয়া শত্রুতা মূলক ভাবে অপ-প্রচারণায় নামিয়াছে।

যদিও আমার তাহার প্রতি কোনরূপ ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নাই, তবু সে আমাকে কেন তাহার জনপ্রিয়তার প্রতি হুমকি স্বরূপ মনে করিয়া থাকে সেটা উক্ত মর্কটই বলিতে পারিবে। অতএব, আমি ঐ মর্কটকেও এইটা জানাইয়া দিতে চাই, কে প্রকৃত জনকল্যাণ মূলক কাজ করিতেছে তাহার বিচার করিতে জনগণ আছেন। নিজেই নিজেকে বিশেষ সমাজসেবী দাবি করিয়া চিৎকার করিয়া গেলে কোনরূপ ফল-লাভ হইবে না। জেলে কাটাইয়া কেউ মহান হইতে পারে না, কেউ ইহাকে মহান বলিয়া প্রচার চালাইলেও উহা প্রকৃত মহান কর্ম কি না তাহা পুলিশের রিপোর্ট জনগণের সম্মুখে আসার পরই প্রতীয়মান হইবে। ছিচকে চোর যদি চুরির নিমিত্তে পুলিশের হাতে উত্তম-মধ্যম লাভ করে এবং পূর্বের জনকল্যাণমূলক কাজের জের হিসেবে প্রকাশ করে, তাহা জনগণ কিছুদিন বিশ্বাস করিলেও পরে আসল সত্য প্রকাশ হইয়া যায়। এক সময়ের বঙ্গবীর পরে তস্করে পরিণত হইতে পারে, এবং পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হইতে পারে। ইহা কোনরূপেই জনকল্যাণের নিমিত্তে গ্রেপ্তার হইতে পারে না। জনগণের যানবাহন ভাঙচুর, পথ চলাচলে বাধার সৃষ্টি করার কারণে গ্রেপ্তারকে কেউ সুকৌশলে জনকল্যাণের কারণে প্রতিহিংসামূলক গ্রেপ্তার বলিয়া প্রচার করিতেই পারে, কারণ থানায় পুলিশের সাথে প্রকৃত কি ঘটনা ঘটিয়াছিল তাহা এখনও লোকচক্ষুর অন্তরালেই রহিয়াছে। যে কোন ভাল গল্পকার কোন গোপন ঘটনাকে ইচ্ছা মতন কল্পনার নিরিখে সাজাইতে পারে। আসল ঘটনার প্রকাশ পাইবে যদি ঠাকুর ঘরে কে রে বলার সাথে সাথেই কেউ আমি কলা খাইনি বলিয়া চিৎকার করিতে থাকে...

Sunday, September 23, 2012

ভাবনার সেকাল আর একাল...


এখনকার মানুষের, না আসলে যুবা বয়সের মানুষদের ভাবনার গভীরতা কম বলে আনেকেই অভিযোগ করেন। আমার এই ব্যাপারে নিজস্ব একটা থিওরি আছে। আসলে মানুষের ভাবনার গভীরতা কখন বাড়বে? যখন সে ভাবার সময় পাবে। একটা সময় ছিল, যোগাযোগ বলতে কেবল চিঠিই ছিল। একটা চিঠি যেতে আর তার উত্তর আসতে সময় লাগত কমপক্ষে ৬ দিন। একটা বিশাল সময় পার হত জল্পনা-কল্পনায়, প্লানিং-এ। উত্তর কি আসতে পারে, কোন কথার উত্তরে কি লিখব, কোন কোন কথা বাকি রয়ে গেল, এসব। এছাড়া জমানো কথাগুলো এক-দেড় পৃষ্ঠার একটা চিঠিতে গুছিয়ে লিখার মত ব্যাপার-ও ছিল।

কিন্তু এখন আর সেই দিন নেই। ই-মেইল যায় চোখের পলকে, কিন্তু সেটিও এখন শুধু অফিসিয়াল কাজেই ব্যবহার হয়। তারচে বেশি চলে, চ্যাট। অথবা ইচ্ছে হলেই ফোন। সেটিও আবার মোবাইল, মানুষের সাথে সাথেই ঘুরছে। তো যখন যে কথা মনে আসে ইচ্ছে হলেই বলে ফেলা যায়। চিন্তা করার সময় কোথায়? হয়তো একারণেই ভাবার সময়ও মানুষ এখন কম পায় আর ফলশ্রুতিতে, ভাবনার গভীরতাটাও কম মনে হয়। আসল কথা হল, আগে আমদের মাথায় একটা ভাবনা বা আইডিয়া আসত, সেটার রাফ ছোট-ছোট কথা জমা হত, সেটাকে ফ্রেশ করে, মনে জমে থাকা কথাগুলোই সাজিয়ে গুছিয়ে ফ্রেশ করে প্রকাশ করতাম। আর এখন মাথায় একটা আইডিয়া আসা মাত্রই সেটা আমরা বলে ফেলি, আরও মনে আসা মাত্রই আবারও ফোন করে জানিয়ে দিব। সবগুলোই রাফ, কোন ফ্রেশ করে বলার ব্যাপার নেই।

আসলে গভীরতাটা কোন বিষয় না, বিষয় হল উপস্থাপন। আগে ফ্রেশ বা নির্যাসটা গুছানো অবস্থায় সরাসরি পেতাম এখন আর পাই না। গুছিয়ে নিলেই সবকিছুর গভীরতা আগের মতই লাগবে। তবে এখন যদি কেউ প্রশ্ন করে, রাফ থেকে ফ্রেশ করার সময় কিছু ভুল আমরা নিজেরাই শুধরে নিতাম, আরও পরিমার্জন-পরিবর্ধন করা হত, তার কি হবে? সেটার উত্তর আমার জানা নেই, দুঃখিত।